চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে এক বিএনপি কর্মী একটি চায়ের দোকানে টেলিভিশনে খবর দেখার সময় প্রথমে পুলিশ পরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অকথ্য ভাষায় গালির প্রতিবাদ করায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর স্ত্রী গুরুত্বর জখম হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নিমতলা মাদ্রাসা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তি ওই এলাকার বাসিন্দা আবদুল সাত্তার (৫২) ও তাঁর স্ত্রী সুলেখা বেগম।
তাঁরা দু'জনেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই এলাকার একটি চায়ের দোকানে টিভির খবর দেখছিলেন স্থানীয় লোকজন। খবর দেখার সময় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন বিশ্বাসের বাবা বিএনপি কর্মী মজিবুর রহমান প্রথমে পুলিশকে গালি দেয়। পরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি ও কটূক্তি করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আবদুল সাত্তার তাঁর কথার প্রতিবাদ করেন এবং বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। রাতে আবারও তিনি পূনরায় অকথ্য ভাষায় গালি দেন। পরে রাতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সাত্তার প্রতিবাদ করলে মজিবুর ও তাঁর ছেলে ছাত্রদল নেতা আল আমিন বিশ্বাসসহ কয়েকজন এসে হাঁসুয়া দিয়ে হাতে তাঁকে আঘাত করেন। ওই সময় তাঁর স্ত্রী সুলেখা স্বামীকে রক্ষা করতে এসে হাঁসুয়ার আগাতে তিনিও জখম হন। পরে এলাকার বাসিন্দারা আহত স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন ও এনামুল হক জানান, স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে খবর দেখছিলেন সাত্তার ও মুজিবুর। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ও বিএনপির ঘটনার খবরটি প্রচার হওয়ার সময় মজিবুর পুলিশকে গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে সাত্তার বলেন, পুলিশ তো শুনতে পাচ্ছে না। তাহলে গালি দিয়ে কি হচ্ছে। এটাই নিয়ে ঝগড়ার সূত্রপাত।
আহত আবদুল সাত্তার বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার সময় চায়ের দোকানে বসে টিভিতে খবর দেখছিলাম। নারায়নগঞ্জে খবর প্রচারিত হওয়ার সময় মজিবুর পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছেন। ওরাতো শুনতে পায়না তাহলে গালি দিয়ে কি লাভ। এ কথা বলতে সে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নানা ভাষায় গালি দিতে থাকে। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাড়িতে খেতে বসেছিলাম ওই সময় তাঁকে ডেকে
মজিবুর,তাঁর ছেলে আলামিন,সনুসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে পূণরায় একই ভাষায় তাঁদের সহ তাকে গালি দিতে থাকেন। প্রতিবাদ করার একপর্যায়ে তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গলায় কোপ দিতে যাওয়ার সময় হাত দিয়ে আটকিয়ে দেন। ওই সময় তাঁর স্ত্রী তাঁকে রক্ষা করতে এসে তিনিও জখম হন।
এদিকে মজিবুর,তাঁর ছেলে আলামিনসহ পরিবারের সদস্যরা ঘটনার পর পলাতক থাকায় তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমাস আলী সরকার বলেন, এ ঘটনায় আহত সাত্তারের মেয়ে গোমস্তাপুর থানায় মামলা করেছে। আটক রয়েছে ৪ জন। তবে মজিবুর ও তাঁর ছেলে আল আমিন বিশ্বাস গ্রেপ্তার হয়নি বলে ওসি জানান।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গোমস্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন, চৌডালা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হাবিব, বোয়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শামিউল আলম শ্যামল, রহনপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাহিদ হাসান মুক্তা, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম টাইগার তাঁর খোঁজ নিতে ছুটে যান হাসপাতালে।