গ্রাচুইটি এবং পিএফ ফান্ডের টাকার দাবিতে রংপুরের শ্যামপুর চিনিকলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তারা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, টাকা দেয়া না হলে চালু থাকা চিনিকলগুলোতে অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা করা হবে।
শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত চিনিকলটির সামনে অবস্থান নেন প্রায় আড়াই শতাধিক শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্যামপুর চিনিকল এম্পøয়েজি ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সরকার ডাবলু, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন, সাবেক উপ-সহকারী আখ উন্নয়ন কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী, উপ-আখ ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম, আখ সেন্টার ইনচার্জ মাহমুদুল হাকিম ও আকমল হোসেন প্রমুখ।
আরেক সাবেক কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি ১৭ সালে রিটায়ার্ড করেছি। এখন পর্যন্ত গ্যাচুইটির টাকা পাই নি। খুব অভাব অনটনে দিন যাপন করছি। পরিবার পরিজন খুব কস্টের মধ্যে আছে। অচিরেই আমাদের পাওনা আমাদের দিতে হবে। তা না হলে আমাদের পথে পথে ভিক্ষা করে পরিবার চালাতে হবে। ’
অসুস্থ শ্রমিক কাদের মিয়া জানালেন, ‘১৫ সালে রিটায়ার্ড করেছি। কিন্তু পাওনা এখনও পাই নি। আমি খুব অসুস্থ্য। প্রধানমন্ত্রী আমার টাকাটা না দিলে বিনা চিকিৎসায় আমাকে মরতে হবে। ’
কর্মচারী আবদুল লতিফ মিয়া জানালেন, ‘আজকে দুই বছর হলো আমার রিটায়ার্ড হওয়ার। এখনও পিএফ ও গ্র্যাচুইটির টাকা পাইনি। একারণ বউ বাচ্চা নিয়া খুব কষ্টে জীবন কাটাতে হচ্ছে ’
সেন্টার ইনচার্জ আকমল হোসেন বলেন. ‘আমি পিএফ গ্রাচুইটি কিছুই পাই না। বার বার যখন টাকা চাচ্ছি, তখন সরকার বলছে এই বাজেটে আসবে। কাল আসবে, কিন্তু আসছে না। আমরা তো কুলাইতে পারছি না। ’
শ্যামপুর চিনিকিল এম্পøয়েজ ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ্জাহান সরকার ডাবলু বলেন, ‘প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মকর্তা কর্মচারী আমরা অবসরে গেছি। আমাদের সাথে জড়িত প্রায় ১২-১৩ হাজার মানুষ নিয়ে যে আমাদের পরিবার। আমরা সবাই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। এদেশে এখন অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু চিনি শিল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রমিকরা আমরা না খেয়ে আছি। আমাদের অনেকেই দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত। তারা চিকিৎসা করতে পারছেন না। অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল কলেজ যেতে পারছে না। আমাদের জীবন যাত্রা চলছে না।’
ডাবলু সরকার আরও বলেন, ‘আমার সারাজীবন চাকরি করে এই শিল্পকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি। সেই শিল্পে চাকরি করে আমরা অবসরকালীন ভাতা আমরা পাচ্ছি না। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ দিয়েছি। আমাদেও দাবি অক্টোবরের মধ্যে আমাদেও পাওনা সরকার আমাদের দিয়ে দিবেন। যদি না দেয়া হয় তাহলে তাহলে আগামী ২৩-২৪ শেষনে যে মাড়াই কার্যক্রম আসবে সেখানে আমরা মাড়াই করতে দিবো না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মিলগেটে অবস্থান ধর্মঘট করবো। একই সাথে তিনি শ্যামপুর চিনিকলসহ বন্ধ সব চিনিকল চালুর দাবি জানান। পরে দাবি আদায়ে শ্যামপুর চিনিকলের এমডির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।