শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের উপজেলা চাটমোহর। এই উপজেলার পাশর্^ডাঙ্গা ইউনিয়নের টেঙ্গরজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি স্কুল কর্তৃপক্ষের অযতœ আর অবহেলায় এখন পরিত্যক্ত। এটি সংস্কার বা পুননির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্টদের।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল,টেঙ্গরজানি ঈদগাহ মাঠ আর কবরস্থানের পাশে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি এখন পরিত্যক্ত। শহীদ মিনারের পাদদেশে ময়লা-আবর্জনা আর ঘাসের স্তুপ। সামনের অংশ ভেঙ্গে পড়ে গেছে। মিনারের তিনটি স্তম্ভ বিবর্ণ আর ময়লার আস্তরণে পরিপূর্ণ। গ্রামবাসী জানালেন অনেকদিন শহীদ মিনারটি ব্যবহারই করা হয়না। স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকরা এটির দিকে ফিরেও তাকায় না। স্কুলে যাবার নিজস্ব কোন রাস্তা নেই। একসময় গ্রামবাসী কবরস্থান ও ঈদগাহের পাশে নিজেদের জমিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। কবরস্থানে জায়গার উপর দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা। একটি গ্রামকে নিয়েই এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। প্রায় ১ শত ছাত্র-ছাত্রী এই গ্রামেরই ছেলে মেয়ে। সম্প্রতি কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য গ্রামবাসী একটি গেট কবরস্থানের সম্মুখে স্থাপন করেন। মূল গেটে তালা লাগানো থাকলেও ছোট গেট দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে এবং গ্রামবাসী কবরস্থান সংলগ্ন পুকুরে গোসল করকে যান। এ নিয়ে কোন সমস্যা হয়না। অথচ স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা তাদের মোটরসাইকেল কবরস্থানের মাঝ দিয়ে স্কুলে নিতে না পারায় গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। ইউএনও’র নির্দেশে পাশর্^ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী গিয়ে প্রধান গেটের তালা ভেঙে দেন। শনিবার গিয়ে দেখা যায় আবারও তালা লাগিয়েছে কবরস্থান কমিটি।
টেঙ্গরজানি গ্রামের বাসিন্দা ও পাশর্^ডাঙ্গা ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম পিন্টু,গোরস্থান কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম,সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ গ্রামবাসী অভিযোগ করলেন,স্কুলের শহীদ মিনারটি নির্মাণ করার পর এক বছর ব্যবহার করা হয়েছিল। এরপর এটি আর ব্যবহার করা হয়না। শহীদ দিবসসহ অন্যান্য জাতীয় দিবসে কোন প্রকার কর্মসূচি নেওয়া হয়না বা শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়না শহীদ মিনারে। অথচ প্রতিটি দিবস উদযাপনের জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দ থাকে।
গ্রামবাসী আরো অভিযোগ করেন শোকের মাস আগস্ট এবং বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী উদযাপনে প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে ২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ ছিল। কিন্তু কোন কর্মসূচি পালন করা হয়নি। তবে একটি ব্যানার তৈরি করে ফটো তোলা হয়েছে। একটি গাছের চারা রোপন করা হয়েছিল,যা এখন মরে গেছে। এ প্রতিনিধিকে তারা গাছের মরা চারাটি দেখালেন।
গ্রামবাসী জানান, স্কুলের মাঠটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে পাটখড়ি শুকানোর জন্য। স্কুলের এক শিক্ষক এই টাকা গ্রহণ করেছেন। এই স্কুলে স্লিপ কর্মসূচির অর্থসহ বিভিন্ন সময় বরাদ্দকৃত অর্থ নয়-ছয় করা হয়। কেউ কখনও দেখেন না। অথচ শহীদ মিনারটি সংস্কার বা সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মাহবুবুর রহমান বলেন,আমি সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে সবকিছু দেখে অবশ্যই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কোন অবহেলা মেনে নেওয়া হবেনা।