বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পেরেশনের হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মচারী কর্মকর্তারা গ্রাইচুইটির পাওনা টাকা না পেয়ে বছরের পর বছর মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কোন কোন শ্রমিক কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর ৭ থেকে ৮ বছর পাওনা টাকার জন্য ধর্না দিয়ে টাকা পাচ্ছে না। অনেকে টাকা পওয়ার আগেই মারা গেছেন ও টাকার অভাবে চিকিতসা হতে পারছে না। কপোরেশনের নিয়ন্ত্রনাধীন দেশের চিনিকল গুলোতে কয়েক বছর আগেও অবসরে যাওয়া ব্যাক্তিদের মিলের চিটাগুড় ও চিনি বিক্রি করে পাওনা টাকা পরিশোধ করতো। বর্তমানে চিনির দাম বৃদ্ধি ও গেল বছর ৬ টি চিনিকল বন্ধ ঘোষনার কারণে চিনি উৎপাদন কম সে কারণে এখন আর অবসরদের চিনি দেওয়া হয় না। যে কারণে মারাতœক সমস্যায় পড়েছে হাজার হাজার অবসরে যাওয়া ব্যাক্তিরা। এদিকে পাওনা টাকার জন্য শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তারা মানববন্ধন, মিছিল,মিটিং করছে চিনিকল গুলোতে বিভিন্ন কমসুচি ঘোষনা করেছে। কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে প্রদানমন্ত্রী বরাবর স্বারক লিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি রয়েছে।
বাংলাদেশ চিনিও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের অধিনে ১৫ টি চিনিকল ও একটি যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা রয়েছে। তন্মধ্যে ২০২১/২০২২ মাড়াই মৌসুমে ৬টি চিনিকল বন্ধ ঘোষনা করে সরকার। বর্তমানে চালু রয়েছে ৯টি চিনিকল। এসব চিনিকলের কারখানা ও বিভিন্ন বিভাগে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অবসরে যাওযা শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তার সংখ্যা দাড়াবে ৩ হাজার ৪৫৫ জন। যাদের পাওনা টাকার পরিমান প্রায় ৩৪১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। ভিন্ন শুধু একমাত্র দর্শনা কেরু এ- কোম্পানি লিমিটেড। অবসরে যাওয়া শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তাদের পাওনা টাকা দ্রতই পরিশোধ কতরে পারে। এদিকে পঞ্চগড় চিনিকলে অবসরে যাওয়া ২৯৮ জন শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তাদের পাওনা ১৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা, ঠাকুরগাও চিনিকলের ১৮৬ জনের পাওনা ১৮ কোটি ৪ লাখ টাকা, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ১৭৫ জনের ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ১৯২ জনের ১৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, শ্যামপুর চিনিকলের ১৮৭ জনের ১৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা, রংপুর চিনিকলের ৫২ জনের ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, জয়পুরহাট চিনিকলেরর ১৪০ জনের ১১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, নাটোর চিনিকলের ৪১৮ জনের ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, নর্থ বেঙ্গল চিনিকলেরর ২১৫ জনের ১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা, পাবনা চিনিকলের ৭৯ জনের ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, কুষ্টিয়া চিনিকলের ১৯৯ জনের ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ফরিদপুর চিনিকলের ৩৮৬ জনের ২৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, ঝিল বাংলা চিনিকলেলর ১৬৫ জনের ১২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এ ছাড়া কর্পোরেশণের সদর দপ্তরে অবসরে যাওয়া ৩৯১ জনের পাওনা রয়েছে ১০৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং রেন উইক যগেঞ্জর মিলে ৫৪ জনের ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারী কর্মকত্যা কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক ফেরদৌস ইমাম জানান, আমরা অবসরে যাওয়া ব্যাক্তিরা পাওনা টাকার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষনা করেছি। আমাদের কোন পেনশন নেই। ফলে অবসরে যাওয়ার পর পাওনা টাকা একবারে পরিশোধ করার কথা। আগে অল্প অল্প করে পরেশোধ করতো এখন তাও বন্ধ করে দিয়েছে। চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন শিল্প মন্ত্রনালয়ের অধিনে হওয়ায় কর্মকর্তারা বলছেন মন্ত্রনালয় জেতে। মন্ত্রনালয়ে গেলে বলা হচ্ছে চিনিকল তো রাজস্ব না, আপনাদের টাকা করপোরেশন পরিশোধ করবে। এভাবে অফিসে আফিসে হাটতে হাটতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এখন বাধ্য হয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষনা করছি।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালক (অর্থ) খোন্দকার আজিম আহমেদ জানান, আপাতত কোন ফান্ড নেই, এটাই তো পাওনাদার শ্রমিকরা জানে না। আমরা কর্পোারেশনের পক্ষ থেকে সরকারকে অবহিত করেছি। টাকা পেলে অবসর প্রাপ্তদের পরিশোধ করা হবে।