পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলায় বন বিভাগের শত শত একর জমি বে-দখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জমি দখল করতে লাগানো হয়েছে সুপারী চারা, চা বাগানসহ নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থায়ী অবকাঠামো। কোথাও আবার ট্রেড ইউনিয়নের নামে স্থায়ীভাবে গড়ে তোলা হয়েছে পাকা ঘর। তবে এসব দখল হওয়া জমি উদ্ধারে ও বন বিভাগের গেজেট ভুক্ত জমি রক্ষায় বন বিভাগের জোড়ালো কোনো ভ’মিকা নেই বললেই চলে।
পঞ্চগড় বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাহুক ব্রীজ সংলগ্ন মাঝিপাড়া ডাহুক ফরেস্টে গেজেট ভুক্ত প্রায় ১ শত একর জমি ও তীরনই হাট বাজার সংলগ্ন এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের দুইপাশে প্রায় ১ শত ৪ একর জমি রয়েছে।
শনিবার দুপুরে সরজমিনে ওই ফরেস্টের জমি বন বিভাগের দখলে রাখতে উপকারভোগী জালাল উদ্দিনকে নামমাত্র ছোট্র একটি টিনের চালা বানাতে দেখা যায়। জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন বলেন, বন বিভাগের জমি রক্ষা করতে আমরা আমাদের সাধ্যমত ১ একর ২২ শতক জমি বাঁশের বেড়া দিয়ে সুপারী চারা রোপন করেছি।
এদিকে কাঞ্চনজক্সঘা টি এস্টেট নামক একটি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৫-২০ একর জমিতে চা বাগান করেছে। এই চা বাগানের ম্যানেজার ফয়সাল হোসেন জানান, তাদের ৫১ একর ৫২ শতক জমির ক্রয় সূত্রে মালিকানা রয়েছে। এখানে এম দেলোয়ার হোসেন গং জমির মালিকানা দাবী করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।
অপরদিকে তীরনই হাট সংলগ্ন বন বিভাগের গেজেট ভ’ক্ত ১ শত ৪ একর জমির প্রায় অর্ধেক জমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে শ্রমিকদের অফিস। সেখানে একজনের বসত ভিটা নির্মাণের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, বছরের পর বছর বন বিভাগের জমি হিসেবে জেনে আসলেও সম্প্রতি ফরেস্টের জমি দখল করে চা বাগানসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত নির্মাণ করেছে কাঞ্চনজক্সঘা নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দখলদারিতে অনুপ্রাণিত হয়ে কয়েকদিন আগে তমা নামক একটি প্রতিষ্ঠান ইউকিলিপ্টাস গাছের ফাঁকে ফাঁকে সুপারীর চারা রোপন করেছে। তবে এসব জমি দখলের সময় বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো কার্যকরী ভ’মিকা দেখা যায়নি।
একটি সূত্র জানায়, বন বিভাগ একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারের জমি দখলমুক্ত রাখতে বন বিভাগ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা প্রয়োজন। যা তাদের মধ্যে নেই।
এ ব্যাপারে কাঞ্চনজক্সঘা টি এস্টেটের জেনারেল ম্যানেজার মো: আলী হোসেন জানান, জমিটি প্রথম আবদুর রাজ্জাক প্রধানের নিকট ১৯৯৩ সালে ক্রয় করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে আরও কিছু জমি ক্রয় করা হয়।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সহকারী বন সংরক্ষক কার্যালয়ের ফরেস্ট রেঞ্জার মো: উজ্জ্বল হোসাইন জনবল সংকটের অজুহাত দিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রায় ২ শত ৫০ টি সুপারী চারা তুলে ফেলেছি। কাঞ্চনজক্সঘা টি এস্টেটের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তীরনই হাটসহ অন্যান্য বে-দখল হওয়া বন বিভাগের জমি উদ্ধারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।