আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় বীর বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট এর সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনার অবৈতনিক মহাসচিব শহীদ ময়েজউদ্দি আহমেদের হত্যাকারী জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খানের অন্যতম সহচর মো. রফিক খান এখন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলাধীন বক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বনে গেছেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তৃনমূলে চলছে ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দার যড়।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, বিগত ১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকার পতনের লক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আহবানে হরতাল পালনের সময় গাজীপুরের কালীগঞ্জে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ময়েজউদ্দিন আহমেদ তৎকালীন জনদলের (জাতীয় পার্টি)’র অস্ত্রধারী ক্যাডার আজম বাহিনীর হাতে খুন হন। খুনি আজম খানের মূল ঘাঁটি বা সন্ত্রাসী এলাকা ছিল ঢাকার ফার্মগেট। আর এ এলাকায় খুনি আজম খানের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান কালীগঞ্জ উপজেলাধীন বক্তারপুর ইউনিয়নের সভাপতি মো. রফিক খান।
অনুসন্ধ্যানকালে আরোও জানা যায়, ময়েজউদ্দিন আহমেদ হত্যা মামলার রায়ের দিন অর্থাৎ ৫ আগস্ট ১৯৮৫ সালে খুনি আজম খানের নির্দেশে মো. রফিক খান ও মো. আলমগীর গংদের নেতৃত্বে ঢাকা জর্জ কোর্টে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটায়। ঐ দিন বোমা বিস্ফোরণের আঘাতে পিরোজপুর জেলা রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক ধীরেন্দ্র নাথ বাবুর পা উড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে ছিলেন।
আরোও জানা যায়, শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদ হত্যা মামলা চলাকালীন প্রায়ই সন্ধ্যায় মো. রফিক খান ও তার দলবল ঢাকার সিদেশ্বরী বাসার আশপাশে দলবল নিয়ে পাহারা দিতো। আর লক্ষ রাখত মামলার কোন কোন সাক্ষী ঐ বাসায় যাতায়াত করেন। একদিন ময়েজউদ্দিন আহমেদ এর ছোট ভাই শাহাবুদ্দিন আহমেদ তাঁকে বাসার পাশে পাহাড়া দিতে দেখে রফিক খানের গালে চড় দিয়ে এলাকা ত্যাগ করতে শাসিয়ে ছিলেন। শুধু তাই নয় রফিক খান ও তার দলবল বিভিন্ন সময়ে কালীগঞ্জে অস্ত্র নিয়ে যাতায়াত করতো বলে জানা যায়। শোনা যায় এই রফিক খান কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় ঢাকা থেকে অস্ত্র ধারী বাহিনী নিয়ে আজম খানের নির্দেশে মহড়া দিতো। তখন কালীগঞ্জে শ্রমিক কলেজে একদিকে ছাত্র লীগের একক প্যানেল, অপর দিকে ছাত্রদল, ছাত্রসমাজ ও ছাত্র শিবিরের যৌথ প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতো। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় ১৯৮৯ সালে আজম খানের নির্দেশে রফিক খানের বাহিনী ও ছাত্র দলের অস্ত্র ধারী বাহিনীর যৌথ হামলায় মাইনুল ও বশির মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছিল।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আজ লক্ষ্য করছি যে আজম খান জাতীয় বীর ময়েজউদ্দিন আহমেদকে খুন করেছে আজ তার ক্যাডার রফিক খান সুকৌশলে তার লেবাস পাল্টিয়ে রাতারাতি আওয়ামী লীগের কর্ণধারে পরিনত হয়েছেন। অথচ শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদ এর সুযোগ্য কন্যা মেহের আফরোজ চুমকি এমপিই কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। খুনি আজম খান এখন বলে বেড়ায়, এখন আমার আর কোন সমস্যা নেই। আমার কর্মীরা এখন কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগ পরিচালিত করছেন। বক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমার সহচর মো. রফিক খানসহ বিভিন্ন পদে একাধিক নেতাকর্মী রয়েছে।
এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তৃনমূলে চলছে ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দার যড়।