উপজেলা কোনাপাড়া গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আঃ ওয়াহাব সরকারের ছেলে এবং খারনৈ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে 'ভুয়া কাগজ পত্রাদি সৃজন করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের দায়ে" গত ৩১ আগস্ট কলমাকান্দা উপজেলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের সম্মানীভাতা সাময়িকভাবে বন্ধসহ প্রতারনার জন্য তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
সেই অভিযোগ ও বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের প্রেক্ষিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ও পত্রিকার কয়েজন প্রতিবেদক অভিযুক্তকারীর বাড়িতে গেলে প্রতারক আমজাদ হোসেন তার প্রতারণার সত্যতা স্বিকার করে বলেন,
তিনি ১৯৭৫ সালে ম্যাট্রিক পাস করলেও কোনো পাসের সনদপত্র তার কাছে নেই, তিনি ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কলমাকান্দা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নকল নবীশের কাজ করতেন, সেনাবাহিনীতে কোনোদিন চাকরীও করেননি,
নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি কাগজ উপস্থাপন করেন, সেখানে তার মুক্তিযোদ্ধা নম্বর: ০১৭২০০০৩৭৩৮ এবং মুক্তিযোদ্ধার সমর্থনে প্রমাণক তথ্য- মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী) ২৫৫৮ উল্লেখ করেন।
সেনাবহিনীতে চাকরী না করেও মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী) তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্তির বিষয়ে আমজাদ হোসেন জানান, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ধামাইল গ্রামের মৃত আবদুল জোব্বারের ছেলে মুসলিম উদ্দিনকে দিয়ে তিনি টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা করিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী) তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্তির বিষয়ে তিনি কোনো কিছুই জানেন না। সোনালী ব্যাংক কলমাকান্দা শাখায় ২৫০২৬০১০২৫৬৩১ নং হিসাব নাম্বারে গত জুন মাস থেকে ২ মাসের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এবং ঈদ বোনাসের টাকাসহ মোট ৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন বলে স্বিকার করেন।
অভিযোগের সত্যতা স্বিকার করে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাশেম জানান, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো: রেজাউল করিম জানান, তদন্তে গত জুন মাস থেকে ২ মাসের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এবং ঈদ বোনাসের টাকাসহ মোট ৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন, দু’একদিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
হঠাৎ এই আর্বিভূত প্রতারক আমজাদ হোসেনের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধসহ তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধারা।