খুলনার পাইকগাছায় বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টিতে খরায় পুড়ছে আমন ফসলের মাঠ। আর পুড়ছে কৃষকের স্বপ্ন। বর্ষার মৌসুম শেষ হলেও আমন চাষের উপযোগী পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের মাঠ এখনও অনাবাদি পড়ে রয়েছে। উপজেলায় বর্ষার মৌসুমেও অনাবৃষ্টিতে বাধ্য হয়ে কৃষকরা স্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিয়ে আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন। কৃষক বলছে, তারা ধারণা করেছিলেন কিছুদিন পর বৃষ্টি হবে। তবে সেচ দিয়ে যেসব জমিতে চারা রোপণ করলেও বর্তমানে ঐসকল জমিতে পানি সেচ দিয়ে চারা বাঁচিয়ে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। আমনের চারা রোপণের সময় ফুরিয়ে এলেও পানির অভাবে এখন পর্যন্ত চারা রোপন করতে পারেননি অধিকাংশ কৃষক। অনেকে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করলেও পানির অভাবে রোপণকৃত চারা হলুদ হয়ে যাচ্ছে, চারা মরে যাচ্ছে। কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অনেকের বীজতলায় চারার বয়স বাড়লেও পানির অভাবে জমি চাষই করতে পারছেন না। তারা জানায়, যে সকল কৃষকরা সেচ দিয়ে জমি চাষ করে চারা রোপণ করেছিলেন বর্তমানে তাদের নিয়মিত সেচ দিয়ে চারা বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ কারণে বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এ বছর ১৭ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বীজতলার জন্য কৃষক বীজধান ক্রয় করেছে তবে পানির অভাবে জমি আবাদ করতে পারেনি। উপজেলার গদাইপুর, কপিলমুনি, হরিঢালী, রাড়-লীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, বীজ ধান কিনেছিলেন তারা। তবে বৃষ্টির অভাবে বীজতলা প্রস্তুত করতে পারেননি। আমন চাষের সময়ও পার হয়ে যাচ্ছে। গত বছর এ সময় আমন ধানের চারা লাগানো শেষ হয়েছিল, আর চলতি মৌসুমে এখনও আবাদই শুরু করতে পারেননি। উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষকরা ধারণা করছেন কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে উঁচু জমিতে এবছর আমন চাষ করা সম্ভব হবে না। অনাবাদি থেকে যাবে ঐ সকল জমি। তবে মাছ চাষের লীজঘেরে নাবী জাতের আমনের চারা লাগানো যাবে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমনের আবাদ হয় বর্ষাকালে। বৃষ্টি নির্ভর আমনের চাষাবাদ। কমপক্ষে ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রয়োজন হয় আমনের চারা রোপণ করতে। তবে গত এক মাসে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৫০ মিলিমিটারের মতো। আর সে কারনেই উপজেলার বহু জমি পতিত রয়েছে। তবে বৃষ্টির সময় এখনও রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সেচ দিয়ে জমিতে ধানের চারা রোপনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে সেচ দিয়ে চাষ করতে কৃষকদের একটু খরচ বাড়বে। বৃষ্টি হলে তাদের জন্য কাজটি অনেক সহজ হতো। আর অনাবৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় বীজতলা নষ্ট হয়েছে। তাই কৃষকদের নাবী জাতের বীজতলা তৈরি করতেও বলা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে তাদের কর্মীরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।