গত ৬ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর-তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের পর বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের হাতে নৌকার সমর্থকদের মারধর ও বাড়িঘরে হামলার তান্ডব একনো চলছে। নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি সাংবাদিকরাও। কিশোর গ্যাংরা প্রতিপক্ষের কিশোরদের কান ধরে ওঠবস করানোর মতো ঘৃণিত অত্যাচার চালাচ্ছে। কান ধরে ওঠ-বস করানোর একটি ভিডিও এখন বাউফলে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। সম্মানহানির ভয়ে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে নৌকার সমর্থকরা।
ভূক্তভোগী প্রথম আলোর উৎপাদন বিভাগের অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, নির্বাচনের পরদিন বিকেলে ছোট ডালিমা ব্রিজের উপর ফুফাতো ভাই সোহাগকে নিয়ে গল্প করছিলাম। এ সময় স্থানীয় সায়েম, শামিম, রাকিব ও বনি আমিন দলবল নিয়ে এসে হঠাৎ আমাকে কিলঘুষি এবং লাথি মারতে থাকে। তারা আমার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যায়। মানিব্যাগে ৭ হাজার টাকাসহ অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল। ঘটনার পর খবর পেয়ে আমাদের বাউফল প্রতিনিধি আমাকে উদ্ধার করে কালাইয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করান। ভয়ে আমি ঢাকা চলে আসি। এদিকে নিজ তাঁতেরকাঠী গ্রামে সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িঘর কুপিয়ে তচনছ করার পর কোথাও অভিযোগ দায়ের না করতে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে দেয়া অভিযোগ উঠিয়ে নিতে চাপ দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পিছিয়ে নেই কিশোর গ্যাং দলও। তামিম নামের একজনের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং রাব্বি, শাওন, রাজ্জাক ও জিসানসহ এক দল কিশোরকে কান ধরে ওঠ বস করিয়েছে। কান ধরে ওঠ বস করার ওই ভিডিও এখন বাউফলে ভাইরাল। জানা গেছে, তামিমের নেতৃত্বে ওই কিশোররা বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক এবং যাদেরকে কান ধরে ওঠ বস করানো হয়েছে তারা নৌকার সমর্থক।
এদিকে ১০ সেপ্টেম্বর পরাজিত নৌকার প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুক এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার ও বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন। তাদের ষড়যন্ত্রেই আমাকে মাত্র ৬৫ ভোটে হারতে হয়েছে। নির্বাচনের পর বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী এস.এম মহসিনের সমর্থকরা নৌকার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, মারধরসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। তাদের ভয়ে নৌকার সমর্থকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ভয়ে কেউ থানায় অভিযোগও দিতে পারছেনা। এদিকে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ১৭৫ জন আসামি হওয়ায় এলাকা এখন পুরুষশূণ্য।
এসম্পর্কে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল মামুন জানান, এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে। কিশোর গ্যাংদের ধরতে অভিযান চলছে।