রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় বোন কে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করায় ভাইকে রাতের অন্ধকারে ভাইকে ডেকে নিয়ে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নেয়ার পর কুপিয়ে আহত করেছে চতরা এলাকার মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত রবিউল ইসলাম। আহত ভাই মনোয়ার মিয়া এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার গভীর রাতে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের চতরা হাট সংলগ্ন মাহালী পাড়া রাস্তার মোড়ে। মনোয়ার মিয়া ইকলিমপুর গ্রামের মোন্তাজ আলী ছেলে। এলাকাবসী জানায়, দরিদ্র্যতার কারণে সে ঢাকায় রিক্সা চালায়। মনোয়ারের বাবা মোন্তাজ আলী বলেন, তার ছেলে ঢাকায় সারা বছর রিক্সা চালায় এবং সে গত মঙ্গলবারে বাড়িতে এলে এ ঘটনা ঘটে। গত শুক্রবার রাতে মনোয়ার মিয়া কাঁঠাল পাড়া গ্রামের সাত্তার আলীর ছেলে কবির মিয়ারসহ কৃষ্ণপুর গ্রামের তাহা পীরের মাজার ওরস মাহফিলে যায়। সেখান থেকে রাত ১১ টায় মোটরসাইকেল যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। মাহালী পাড়া রাস্তার মোড়ে পৌঁছুলে, রাঙ্গামাটির গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মাদক সম্রাট রবিউল ইসলাম ও চতরা ফকির পাড়া গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে ফিরোজ মিয়াসহ কয়েকজন ছেলে পথরোধ করে। মোটর সাইকেলের পিছনে বসা মনোয়ার মিয়ার কলার ধরে রাস্তার পশ্চিম পাশে ধানের ক্ষেতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে ধ্বস্তাধ্বস্তির একপর্যায়ে রাস্তার ইউক্যালিপ্টাস গাছের ডাল ভেঙ্গে রবিউল ও ফিরোজ মিয়াসহ ৪ /৫ জন এলোপাতাড়ি মারপিট করে। এ সময় তারা মোনয়ারের মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নিয়ে পরিধেয় বস্ত্র খুলে নেয়। মোটর সাইকেল চালক কবির মিয়া বলেন তার পিছনে বসে থাকা মনোয়ার কে টেনে হেঁচড়ে পাশের ধানের জমিতে নিয়ে যায়। সেখানেও তাকে মারপিট করে ফেলে রেখে গরু চোর বলে প্রচার করে। স্থানীয় লোকজন জানান,মনোয়ারের অবস্থা বেগতিক দেখে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে ঘটনা স্থলে পুলিশ এসে অসুস্থ মনোযারকে চতরা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। পীরগঞ্জ থানার এসআই জামিউল চিকিৎসার জন্য মেডিকেল নিয়ে যেতে বলে। এ বিষয়ে ফিরোজ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,তার বাড়িতে রাতে গরু চুরি করতে যায় মনোয়ার সেই কারণে জনগণ গণধোলাই দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। মনোয়ার মিয়ার বোন লাকী বেগম বলেন, চকরাঙ্গামাটি গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে একাধিক মামলার আসামি ও মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত রবিউল ইসলাম কে সে চাচা ডাকেন। অনেকদিন থেকে তার বাসা পাশে রাতের অন্ধকারে মাদক সেবন করে খারাপ কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল রবিউল। তাছাড়া প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি তার পরিবারের লোকজকে জানালে রবিউল ক্ষিপ্ত হয়। বড় ভাই ঢাকায় ছিল। গত বৃহস্পতিবার বাড়ি আসার পর তাকে জানানো হলে সে রবিউলকে নিষেধ করে। গত মঙ্গলবার ভাই বাড়িতে আসার সাথে সাথেই এই ঘটনাটি ঘটলো। লাকী আরও বলেন, তার ভাইয়ের শারিরিক অবস্থা ভালো নয়। রোববার পীরগঞ্জ মেডিকেল থেকে ভাই কে রিলিজ দেয়া হয়েছে। বাড়িতে আসার পর মাথা ও কানের যন্ত্রণায় ভুগছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানায় দুটি অভিযোগ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত মামলা রেকর্ড করা হয়নি। ঘটনার পরদিন আহত রোগী কে হত্যার হুমকি দিয়ে পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাটকীয় ভাবে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে অই রাতেই মেডিকেলের বেড থেকে বের করে দেয় মাদক সম্রাট রবিউল ও তার লোকজন। পীরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল আউয়াল বলেন-অভিযোগ নিয়ে আসলে মামলার ব্যবস্থা করা হবে।