সাতক্ষীরায় বেড়েছে বারি উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড টমেটো চাষ। গতবছরেরর তুলনায় এবছর ২৫ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় গত বছর ৭০ হেক্টর জমিতে এ জাতের টমেটো চাষ হয়েছিল। এ বছর ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় প্রতি বছরই জেলার বিভিন্ন এলাকায় সবজিটির চাষ বাড়ছে।
তবে কৃষকদের দাবি, ডিজেল, সার ও কিটনাশকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। একই সঙ্গে ভরা মৌসুমে ভারত থেকে টমেটো আমদানি না করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
এদিকে কৃষকদের টমেটো চাষে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা জেলার মাটি ও আবহাওয়া গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের জন্য খুবই উপযোগী। স্বল্প সময়ে অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা টমেটো চাষে ঝুঁকছেন। বর্তমানে জেলায় বারি-৮, বারিরি-১০ ও বারি-১১ জাতের উচ্চফলনশীল গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করছেন কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার কলারোয়া উপজেলার বাটরা গ্রামে ৮ বছর আগে স্বল্প পরিসরে গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড টমেটো চাষ শুরু করেন কয়েকজন কৃষক। প্রথম বছর থেকেই টমেটোর ভালো ফলন পাচ্ছেন তারা। বর্তমানে প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে ১৫০ জন কৃষক এই টমেটো চাষ করেছেন। স্বাবলম্বি হয়েছেন কৃষক, কর্মসংস্থান হয়েছে দেড় হাজার শ্রমিকের।
বাটরা গ্রামের মতোই সাতক্ষীরা সদর ও তালা উপজেলার অনেক এলাকায় এখন গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হচ্ছে।
বাটরা গ্রামের টমেটো চাষি মোহাম্মদ রায়হান, তরিকুল ইসলাম ও আবদুল আলিম জানান, এক বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করতে কৃষকের খরচ হয় প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা। ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমির টমেটো বিক্রি হয় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায়। তবে ডিজেল, সার ও কিটনাশকের দাম বাড়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।
তারা আরও জানান, টমেটোর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ভরা মৌসুমে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ রাখা। একই সঙ্গে কোল্ড স্টোরেজ চালুরও দাবি জানান তারা।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ডঃ মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন জানান, স্বল্প সময়ে অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন গত বছর সাতক্ষীরা জেলার ৭০ হেক্টর জমিতে সবজিটি চাষ করেছিলেন কৃষক। চলতি বছর চাষ হয়েছে ৯৫ হেক্টর জমিতে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া টমেটো চাষের জন্য খুবই উপযোগী। স্বল্প সময়ে
অত্যন্ত লাভজনক সবজি হওয়ায় কৃষদের টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে বাটরা গ্রামে একটি বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া, শিগগিরি মাল্টি চেম্বার কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে, যেখানে টমেটোর পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি ও আলু সংরক্ষণ করা যাবে।