গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পুরনো মাটির ঘরের দেয়াল ধসে আব্দুল্লাহ আল নাঈম (২৬) নামে এক শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মুত্যু হয়েছে। এ সময় তার ছোট ভাই নাদিম গুরুতর আহত হয়। তাদের পিতা সিদ্দিকুর রহমান একই এলাকার ফকির শাহাবুদ্দিন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। নিহত নাঈম গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ থেকে গণিত বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকরির জন্য চেষ্টা করে আসছিলো। তিনি গাজীপুরে থাকতেন। চাকরির ইন্টারভিউর দেয়ার জন্য কাগজপত্র নিতে গ্রামের বাড়ি এসেছিলেন। ক্রবার দিবাগত রাত সোয়া বারোটার দিকে উপজেলার তরগাও ইউনিয়নের দিগদা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাঈম দিগদা গ্রামের সিদ্দিক মাস্টারের ছেলে।
জানা যায়, স্থানীয় ফকির শাহাবুদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক সিদ্দিক হোসেনের বাড়িতে পশ্চিম ও উত্তর ভিটায় দুটি জীর্ণ মাটির ঘর। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নাইম গাজীপুর সদর থেকে বাড়ি আসে। রাতের খাবার খেয়ে ছোট ভাই নাদিমকে সাথে নিয়ে পশ্চিম ভিটার মাটির ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। উত্তর পাশের্^র ঘরে মা-বাবা ঘুমায়। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হঠাৎ ছেলেদের ঘরের মাটির দেয়াল ধসে দুই ভাই মাটির নিচে চাপা পড়ে। এ সময় এলাকাবাসী বিকট শব্দ শুনে সেখানে ছুটে আসেন এবং তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। ঘরের চারদিকের মাটির দেয়াল ধসে দুমরে মোচরে যায়। খবর পেয়ে কাপাসিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মিরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় দুই ভাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাইমকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নাদিমকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া নাদিম (২৩) মানসিক প্রতিবন্ধী।
পরিবারের বরাত দিয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, শুক্রবার রাতে নাঈম ও নাদিম দুই ভাই তাদের বসতঘরে শুয়ে ছিলো। হঠাৎ রাত সোয়া বারোটার দিকে ঘরের দেয়াল ধসে দুইজনই মাটিচাপা পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার করলে নাঈমের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের ইচ্ছায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টায় মরহুমের জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।