নীলফামারী জেলায় জাল সনদে যুগের পর যুগ ২৪ জন শিক্ষক চাকরি করে আসছেন। জাল সনদ দিয়ে চাকরি করে আসলেও তারা ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এদের অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে লেখালেখি হলেও তারা ছিল বহাল তবিয়তে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ) রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের জাল সনদে চাকরিরত শিক্ষকদের তৃতীয় পর্বের তালিকা প্রকাশ করে। এ দুই অঞ্চলের তিন পর্বের তালিকায় ৩২৩ জনের মধ্যে নীলফামারীর ২৪ শিক্ষকের নাম এসেছে।
জাল সনদধারী শিক্ষকরা হলেন, নীলফামারী সদরে দুহুলি উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মোছা. ছাবিনা ইয়াছমিন ও মোছাঃ রওশন আক্তার। জলঢাকা উপজেলার জলঢাকা দ্বি-মুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক মুকুল হোসেন, মীরগঞ্জ হাট বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক আইয়ুব আলী, বালাপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চবিদ্যালয়ের অনাথ চন্দ্র রায় ও কম্পিউটার শিক্ষক আনারুল হক। চাঁদের হাট উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক রাদিফা বেগম। নীলফামারী সদরের ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা প্রভাষক মোছা. তামান্না সুলতানা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক শিরিনা আক্তার, মাগুড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক মো. লতিফুজ্জামান, মনিকা রানী রায় ও ইংরেজি শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক। ডিমলা উপজেলার সোনাখুলী চাপানী সৈকত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আশরাফ হোসেন, জটুয়াখাতা উচ্চবিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষক সাইফুর রহমান, ছাতনাই কলোনি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের মফিজুর রহমান, খড়িবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক নাজিয়া আলম, তিস্তা কলেজের কম্পিউটার প্রভাষক আবদুর রাজ্জাক।
সৈয়দপুর উপজেলার সাতপাই উচ্চবিদ্যালয়ের আজিজুল ইসলাম ও ধর্ম শিক্ষক আবদুল মতিন। তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষক বলে জানা গেছে।
এছাড়াও ডোমার উপজেলার কেতকি বাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক মোছা. আকলিমা বেগম, বামুনিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মো. জহুরুল হক,
সৈয়দপুর উপজেলার লক্ষ্মণপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক মোছা. মেরিনা মান্নান ও সমাজ বিজ্ঞানের প্রভাষক মো. মজিবুর রহমান, ডিমলা উপজেলা জটুয়াখাতা উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক আলমগীর রহমানের নাম নন এমপিওভুক্ত তালিকায় রয়েছে।
ডিআইএর তথ্যমতে, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের ২৫ মে পর্যন্ত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুদ্ধি অভিযানে ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের শিক্ষাগত ও যোগ্যতার সনদ ভুয়া পেয়েছেন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ (ডিআইএ)। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জাল সনদধারী শিক্ষক রয়েছেন ৪৪৩ জন। এজন্য ওই সব শিক্ষককে দেয়া বেতন-ভাতা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি, তবে এখনো আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। যদি নির্দেশনা আসে, আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাব।