চীন দেশের নামটি এসেছে সে দেশ শাসনকারী এক বংশ থেকে। এই বংশ রাজত্ব করেছিল মাত্র ১৪ বছর। খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দের দিকে বর্তমান চীনের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত চিন রাজ্য ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। চিন শাসকদের বিরোধিতা করেছিল দুটি রাষ্ট্র। কিন্তু চিন বংশের শাসক ও তাদের কূটনীতিকরা ছিল যেমন শঠ তেমন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী। অন্য রাজ্যগুলোকে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে নিজেদের নিরাপদ রেখেছিল। শুধু তাই নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে তারা অন্য রাজ্যকে তাদের অংশবিশেষ ছেড়ে দিতে বাধ্য করত।
চীনে এ নিয়ে একটি প্রবাদ আছে। সেটি হচ্ছে- ‘চিনকে তুষ্ট রাখার জন্য জমি দেওয়া আর কাঠ স্থূপ করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া একই কথা। খিস্টপূর্ব ২২১ অব্দের মধ্যে এই বংশ প্রতিদ্বন্দী সব রাজ্য জয় করে নেয়। এই বংশের শাসক শি হুয়াং তি নিজেকে ঘোষণা করেন সম্রাট। তিনি আবার নিজেকে দেশের প্রথম সম্রাট বলতে পছন্দ করতেন। বাস্তবিক পক্ষেই তিনি ছিলেন প্রথম শাসক যিনি একটি একীভূত সাম্রাজ্য পরিচালনা করতেন। তিনি শাসনব্যবস্থা ঢেলে সাজান। পূর্বেকার প্রচলিত সামন্ত প্রথা বাতিল করে দিয়ে সবকিছু তাঁর নিজস্ব শাসনে আনেন। চীনা লিপি থেকে শুরু করে মাপ ও ওজন পর্যন্ত সব কিছুরই মান তিনি নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। চিন বংশের সাফল্যের কথা যে সব বই বা দলিলে নেই সেগুলো তিনি পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া তার বিরোধিতাকারী প-িত বা গুণীদেরও তিনি হত্যা করেন। পরে তিনি উত্তর থেকে আগত হামলাকারীদের হাত থেকে চীনকে বাঁচাতে নির্মাণ করেন মহাপ্রাচীর।
শি হুয়াং তি স্বপ্ন দেখতেন তাঁর বংশ দশ হাজার পুরুষ ধরে রাজত্ব করবে। কিন্তু নয় বছর রাজত্ব করার পর তিনি যখন মারা যান তখন সিংহাসনে বসে তার অযোগ্য পুত্র সু ইং। এক বিদ্রোহে তিনি নিহত হন এবং তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই এই বংশ ধ্বংস হয়ে যায়।