মিসর শাসনকারী টলেমি বংশের শেষ শাসক ছিলেন সপ্তম ক্লিওপেট্রা। দ্বাদশ টলেমির কন্যা ক্লিওপেট্রা ছিলেন অতিশয় বুদ্ধিমতী, শিক্ষিতা ও শিথিল নৈতিকতাসম্পন্ন নারী। তার শরীরে ছিল গ্রিক রক্ত।
মিসরীয় নিয়ম অনুযায়ী অষ্টাদশী ক্লিওপেট্রা তার ছোট ভাই দশ বছর বয়সী ত্রয়োদশ টলেমিকে বিয়ে করে মিসরের রানি হন। কিন্তু তাদের দুজনের মধ্যে ছিল বিরোধ। খ্রিস্টপূর্ব ৪৭ অব্দে রোমের সেনাপতি জুলিয়াস সিজার মিসরে এলে এই বিরোধের নিষ্পত্তি হয়; সিজারের সঙ্গে যুদ্ধে মারা যান টলেমি। ক্লিওপেট্রা পরিণত হন সিজারের প্রণয়িনীতে এবং সিজারের সঙ্গে তিনি রোমে চলে যান। অবশ্য এ সময় তিনি নামে মাত্র বিয়ে করেছিলেন তার ছোট ভাই চতুর্দশ টলেমিকে।
খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ অব্দে সিজার নিহত হলে তিনি মিসরে ফিরে আসেন। চতুর্দশ টলেমি মারা যাওয়ার পর ক্লিওপেট্রা তার সন্তান পঞ্চদশ টলেমির সঙ্গে যৌথভাবে মিসর শাসন করতে থাকেন। পঞ্চদশ টলেমি ছিলেন সিজারের ঔরসজাত সন্তান, তিনি সিজারিয়ন হিসাবেও ইতিহাসে পরিচিত।
এর তিন বছর পর সিজারের বন্ধু ও সেনাপতি মার্ক অ্যান্টনি মিসরে ক্লিওপেট্রাকে আক্রমণ করতে আসেন এবং তিনি ক্লিওপেট্রার প্রেমে পড়েন। তাদের যমজ সন্তান হয়-এদের একজন আলেকজান্ডার হেলিয়স ও অন্যজন ক্লিওপেট্রা সেলেনি। মিসরের সিংহাসন লাভের জন্য অ্যান্টনি খিস্টপূর্ব ৩৬ অব্দে ক্লিওপেট্রাকে বিয়ে করেন। কিন্তু অ্যান্টনি ছিলেন বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ছিলেন সিজারের উত্তরাধিকারী অক্টাভিয়াসের বোন।
অক্টাভিয়াস এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে আক্রমণ চালিয়ে অ্যাক্টিয়ামে অ্যান্টনিও এবং ক্লিওপেট্রার নৌবহর ধ্বংস করে দেন। অ্যান্টনি পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা করেন। মিসরের নয়া শাসক হয়ে অক্টাভিয়াস ক্লিওপেট্রাকে বিয়ে করতে চাইলেও তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। অক্টাভিয়াসের হাতে নিহত হয় সিজারিয়ন ও আলেকজান্ডার হেলিয়স। সেলেনি বিয়ে করেন নিউমিডিয়ার রাজাকে; তাঁদের ছেলে সর্বশেষ টলেমি নিহত হন ক্যালিগুলার হাতে।