বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীন চারু, কারু ও কুটির শিল্পের পশরা সাজিয়ে সাতক্ষীরায় উদ্বোধন করা হয়েছে ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুর মেলা। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা পৌরসভার আয়োজনে শহিদ আবদুর রাজ্জাক পার্কে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। দীর্ঘ দুই বছর পর ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুরের মেলাটি উদ্বোধন হওয়ায় জেলার মানুষ আনন্দিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, "গুড়পুকুরের মেলা সাতক্ষীরা জেলার ঐহিত্য বহন করে আসছে। আগে এই মেলাটি শহর জুড়ে হতো। দেশী বিদেশী বহু মানুষের আনা গোনা হতো এই মেলায়।" মেলা কমিটি সূত্র জানায়, এবারের মেলায় বিশেষ আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে প্রায় ২০০টি মনোহারি পণ্যের স্টল। রয়েছে নাগর দোলা, ঘোড়ার গাড়ি। এ ছাড়া লৌহজাতদ্রব্য, বাঁশ ও বেতের দোকান, নার্সারি দোকান, শিল্পকলা একাডেমির সামনে নাগরদোলা ও রেলগাড়ি, নৌকা, শহিদ আবদুর রাজ্জাক পার্কের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার রসনাবিলাসী মিষ্টির দোকান। রয়েছে শিশুদের জন্য ব্যাপক বিনোদনের ব্যবস্থা। রয়েছে নানা বয়সী মানুষের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা। তবে এবারের মেলায় জুয়া, হাউজি, লটারি, র্যাফেল ড্র, লাকি কুপন, ফড়, চরকি, নগ্ন নৃত্য এবং অননুমোদিত যাত্রাগান, পুতুল নাচ বন্ধ থাকবে। প্রাথমিক পর্যায়ে মেলা চলবে মাসব্যাপী।
মেলার উদ্বোধনকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. সজীব খান, সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আরিফুর রহমান, সাতক্ষীরা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান, পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ শফিক উদ-দৌলা-সাগর, পৌরসভার ৮নং কাউন্সিলর শফিকুল আলম বাবু, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মারুফ হাসান, মহিলা কাউন্সিলর নুরজাহান বেগম নুরী, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুসফিকুর রহমান মিল্টন প্রমুখ। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মেলা চলাকালীন সার্কাস প্যান্ডেলে এবং সাতক্ষীরার রকসি সিনেমা হলে জঙ্গিগোষ্ঠি বোমা হামলা চালায়। বোমা হামলায় নিহত হয় ৩ জন। আহত হয় অর্ধশতাধিক। এরপর থেকে মেলায় বহিরাগত ব্যবসায়ীদের আসা অনেকটা কমে যায়।