সুং রাজবংশ ৯৬০ থেকে ১২৭৫ পর্যন্ত চীন শাসন করেছে। রাজবংশটি তাদের প্রতিষ্ঠার জন্য এক তরুণ সেনাকর্মকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। ওই তরুণের মনে হয়েছিল, তিনি দিব্যদর্শন করেছেন। একদিন তিনি ঘোষণা করেন যে, চৌ বংশের তরুণ সম্রাট কুং তি’র কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করতে শীঘ্রই এক নতুন ম্রাট আসছেন। তার সহকর্মী সেনা কর্মকর্তারা মনে করলেন যে নতুন এই সম্রাট হচ্ছেন তাদের পরাক্রমশালী সেনাপ্রধান জেনারেল চাও কুওয়াং ইন। তারা তাকে ঘুম থেকে তুলে নতুন শাসক হিসাবে স্বাগত জানালেন। তারা তাকে অভিহিত করলেন সুং তাই সু নামে। এভাবেই জন্ম হল এক নতুন রাজবংশের। সিংহাসনে আরোহণ করে জেনারেল তাই সু ও তার উত্তরাধিকারীরা ৫০ বছরের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত চীনকে টেনে ওপরে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু কাজটি ছিল ওঁদের সাধ্যের বাইরে। ১০৬৮ সালে সম্রাট সুং শেন সুংয়ের প্রধানমন্ত্রী ওয়াং আন শি শাসনব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন। তিনি কর ব্যবস্থা সহজ করেন এবং শ্বেতহস্তী সেনাবাহিনীকে হেঁটে পরিমিত আকারে নিয়ে আসেন। কিন্তু তার সংস্কারের সুফল পেতে না পেতেই মোঙ্গল অধিপতি চেঙ্গিস খান চীন দখল করে নেন।
সুং শাসনামলের চীনা শিল্পকলায় দেশকে যে অস্থিরতা গ্রাস করেছিল তার প্রতিফলন ঘটেছে। কবি ও চিত্রশিল্পীরা ছিল অতীতমুখী। তারা রোমন্থন করত অতীত গৌরব আর অর্জন। শিল্পীরা ছিল আবেগনির্ভর, কাব্যকবিতা ছিল কল্পনা ও পরোক্ষ উল্লেখে ভরপুর- যার অধিকাংশই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ছিল প্রায় দুর্বোধ্য। কিন্তু এই সময়ে পেশাদার কথকদের আবির্ভাব ঘটে। তারা ইউরোপীয় চারণ কবিদের মতো ভ্রমণ করে আগ্রহী যে কাউকে কয়েকটি মুদ্রার বিনিময়ে গল্প শোনাত। চীনা উপন্যাসের উন্নয়নে ও বিকাশের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা রয়েছে।
সামন্তব্যবস্থা সামন্তব্যবস্থা হল মধ্যযুগে পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ এলাকায় প্রচলিত জীবন ও সরকারব্যবস্থা। অষ্টম শতকে ফ্রাংকদের আমলে ব্যবস্থাটি বিকাশলাভ করতে থাকে। পরে ধীরে ধীরে জার্মানি, স্ক্যান্ডিনেভিয়া, স্পেন, ইতালি ও ব্রটিশ দ্বীপসমূহে এ ব্যবস্থা ছাড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নরম্যানদের শাসনামলে এই ব্যবস্থা ইংল্যান্ডে খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সামন্তব্যবস্থার মূলে ছিল সেবার বিনিময়ে দুর্বল ব্যক্তিকে শক্তিমানের জমি প্রদান। এই ব্যবস্থা একদম উপরে রাজা থেকে শুরু করে জমিদার জোতদার হয়ে ভূমিদাসের কাছে গিয়ে শেষ হত।
জমিদার কিংবা জোতদাররা তাদের উপরের শক্তিমান ব্যক্তিকে ভূমির বিনিময়ে যে কাজ করে দিত তা ছিল সাধারণত সামরিক। প্রভুর হয়ে তাদের যুদ্ধে অংশ নিতে হত। এই ব্যবস্থার প্রান্তিক গোষ্ঠী ভূমিদাসদের জমির বিনিময়ে ভূ-স্বামীর জমিতে সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েকদিন কাজ করে দিতে হত। কাজের বিনিময়ে জমি প্রদান ছাড়াও প্রভুরা তাদের শক্তি দিয়ে অনুগতদের রক্ষা করত।
সামন্তব্যবস্থার ফলে অধিকাংশ লোকের জীবনই ছিল প্রাসাদ কিংবা জমিদারি নির্ভর। তবে প্রাসাদ বা জমিদার ভবনের চার পাশের গ্রামগুলো ছিল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। ম্যাগিয়ার হাঙ্গেরিতে সাম্রাজ্য স্থাপনকারী ম্যাগিয়াররা এসেছিল রাশিয়ার স্তেপ অঞ্চল থেকে। তারা থাকত উরাল পর্বত ও ভোলগা নদীর মধ্যবর্তী এলাকায়। নবম শতাব্দের প্রথম দিকে তারা বাস করত ডন নদীর মোহানায়। কিন্তু এই শব্দেরই শেষ দিকে তারা চলে আসে দানিউবের মধ্যবর্তী এলাকায়।
ম্যাগিয়াররা সংখ্যায় ছিল খুবই কম, প্রায় ২৫ হাজার। এরপরও তারা খুব সহজেই স্থানীয় অধিবাসীদের পরাভূত করে এবং জার্মান বাহিনীকে পরাস্ত করে। বেশ কিছুকাল ধরে তারা দাস সংগ্রহ ও সম্পদ লুট করার জন্য আশেপাশের দেশগুলোতে হামলা চালাতে থাকে। ৯৫৫ সালে লেকফিল্ডের যুদ্ধে সম্রাট প্রথম ওটো তাদের পরাজিত করলে ম্যাগিয়াররা পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোর সঙ্গে সদ্ভাব স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। পরে তারা খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে। প্রথম স্টিফেনের সময় তাদের সাম্রাজ্য ৪৬টি দেশজুড়ে বিস্তৃত ছিল। তাঁর আমলে সাম্রাজ্যের উন্নতি ঘটে ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।