দৈনন্দিন জীবনে ধর্মই যেখানে ছিল প্রধান উৎস, এমন এক যুগে যিশুখ্রিস্টের স্মৃতিবিজড়িত ফিলিস্তিন মুসলমানরা দখল করে নেওয়ায় ইউরোপের অনেক খ্রিস্টানই ছিলেন বিচলিত ও আতঙ্কিত। জেরুসালেমে গমনকারী খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীদের সেলজুক তুর্কিরা বাধা দেওয়ায় খ্রিস্টানরা আরও আতঙ্কিত হয়ে উঠে। এ সময় পোপ দ্বিতীয় আরবান মুসলমানদের হাত থেকে তাদের পবিত্র ভূমি উদ্ধারের জন্য ক্রুসেডের ডাক দেন।
ইতিহাসে আট বার ক্রুসেডের কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। প্রথম ক্রুসেড়ে খ্রিস্টানরা ফিলিস্তিনের অধিকাংশ এলাকা দখল করে নেয়। এর প্রায় ৯০ বছর পর মুসলমানরা আবার জেরুসালেম পুনর্দখল করে। পরবর্তী ক্রুসেডগুলোর সাফল্য ছিল সীমিত। চতুর্থ ক্রুসেডের সময় ক্রুসেডাররা ভেনিশীয়দের জাহাজের ভাড়া পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তারা খ্রিস্টান নগরী কনস্টান্টিনোপলেই লুটপাট চালায়। প্রথম ক্রুসেডের স্থায়িত্বকাল ছিল ১০৯৬ থেকে ১০৯৯ সাল; শেষ ক্রুসেড হয়েছিল ১২৭০ সালে।
১২১২ সালের শিশুদের ক্রুসেডে ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে ৫০ হাজার শিশু জেরুসালেমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। জার্মান শিশু ক্রুসেডারদের দলটি ফিরে এলেও অন্যরা আর ফিরে আসতে পারেনি। মার্সেইতে তাদের ধরে ক্রীতদাস হিসাবে বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বলা হয়ে থাকে হ্যামিলনের বংশীবাদক গল্পের মূলে রয়েছে এই বিয়োগান্তক কাহিনী।