ব্রিটেনে গৃহযুদ্ধ চলে ১৬৪২ থেকে ১৬৪৬ সাল পর্যন্ত। রাজা প্রথম চার্লস ও পার্লামেন্ট এবং গির্জা কর্তৃপক্ষ ও পিউরিটানদের মধ্যে কয়েকটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে এই গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত। চার্লস রাজার ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতা ও অধিকারে বিশ্বাস করতেন এবং নিজেকে ভাবতেন আইনের উর্ধ্বে। রাজা চার্লসের এ ধারণা এবং স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে পার্লামেন্ট। ফলে রাজা ও পার্লামেন্ট বারবার বিরোধে জড়িয়ে পড়ে এবং চার্লস তিন তিন বার পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেন। তিনি সব সময় বিশপ বা প্রভাবশালী ধর্মযাজকদের পক্ষ নিতেন। অপরদিকে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্কটল্যান্ডের অধিবাসীদের দাবি ছিল আরও পিউরিটান উপাসনা। এমনি পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর কলেবর ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির ফলে প্রয়োজন দেখা দেয় অধিক অর্থের। এই অর্থের যোগান দেয়ার জন্য রাজা চার্লস জনগণের ওপর চাপিয়ে দেন অসহনীয় করের বোঝা। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মানুষ, শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ। পার্লামেন্ট সদস্যরাও যোগ দেয় গণঅভ্যুত্থানে। অশ্বারোহী বাহিনীতে পার্লামেন্ট সদস্যদের প্রভাব থাকায় এই বাহিনীও হাত মেলায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে। ফলে রাজার অবস্থান ক্রমেই দুর্বল হতে থাকে। এ সময় প্রবল বিদ্রোহ দেখা দেয় স্কটল্যান্ডে। রাজার অনুগত বাহিনী প্রথম দিকে বেশ কয়টি খ-যুদ্ধে বিজয় অর্জন করলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। ১৬৪৫ সালে পরপর দুটি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাজা চার্লস স্কটল্যান্ডের বিদ্রোহীবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হন। স্কটিশরা রাজাকে তার শত্রুপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে ১৬৪৯ সালে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে বিচারে রাজা চার্লস দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাঁকে প্রাণদণ্ড দেয়া হয়। শিরচ্ছেদের মাধ্যমে কার্যকর করা হয় প্রাণদণ্ড। তখন থেকে পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনে পার্লামেন্টের পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয় সেনাবাহিনীর, যার প্রধান ছিলেন জেনারেল অলিভার ক্রমওয়েল।