সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি বলেছেন, ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শুধমাত্র যান্ত্রিক শিল্পের উপর নির্ভর না করে কৃষিকে যান্ত্রিকিকরণ করতে হবে। কৃষিকে প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে একটি আধুনিক শিল্প ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করতে হবে। উচ্চ ফলনশীল বীজ, যান্ত্রিক কৃষি সরঞ্জাম, সেচ সুবিধা, কীটনাশক এবং সার ব্যবহার করে কৃষি বিপ্লব সম্ভব। বৃহত্তর সবুজ বিপ্লবের প্রচেষ্টায় কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। সবুজ শিল্পকে প্রাধান্য দিয়ে উৎপাদন বাড়াতে হবে। তিনি গত ২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় এমপি রিমি আরো বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে মা-বাবাদেরও খোঁজখবর রাখা দরকার। শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল জীবন গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা অনস্বিকার্য। ছাত্র-ছাত্রীদের পোষাক, চুল, নখ, দাঁত ও আচরণগত দিকে শ্রেণি শিক্ষকদেরও খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ করা হবে। কিন্তু ভাতার উপর নির্ভর করে একটা জাতী এগুতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্বের প্রতি যতœশীল না। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তাদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা দিতে পারেন। তারা বুঝে না, তাদের লাভটা কি ? সব ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেই এর সুফল সকলে পাবে। উপজেলা সদরের পানি নিস্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। জানজট নিরসনে বাইপাস সড়কটি ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ ফিট প্রস্ত করা হবে। আমাদের এ এলাকায় বিভিন্ন জাতের প্রচুর ফল ও সবজি উৎপন্ন হয়। এসব কৃষিপণ্য সংরক্ষণ করতে পারলে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি হবে। সর্বপরি তিনি কাপাসিয়ার সার্বিক উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মনির হোসেনের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম গোলাম মোর্শেদ খান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ আমানত হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান, উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন কুমার বসাক, থানার ওসি (অপারেশন) আমিনুল ইসলাম, কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাইজ উদ্দিন ফকির, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলুর রশিদ মোল্লা, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শাহীন, সঞ্জিব কুমার দাস, নুরুল আমীন সিকদার, মজিবুর রহমান মিলন প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমূল হুসাইন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা সরকার প্রমূখ। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, কাপাসিয়ার উন্নয়নে গুরুত্ব অনুযায়ী আগামী তিন বছরের জন্য কর্মপরিকল্পনা নেয়া হবে। নির্বিচারে শিল্পায়ন করা যাবে না। একশত একর জায়গায় শিল্প বান্ধব কৃষিভিত্তিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে হবে। মাদক উন্নয়নের একটা বড় বাধা। বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে ব্যস্ত না থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানে শিক্ষকদের মনোযোগ দিতে হবে। আসন্ন দূর্গা পূঁজার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য সভায় বিভিন্ন জনের পরামর্শে স্বল্পমেয়াদী, মাঝারী মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।