হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে গত মঙ্গলবার পাকিস্তানে পৌঁছেছেন। এ সফরে তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলছেন। খবর ডনের। সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির তত্ত্বাবধানে পাকিস্তান সফর করছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। লস অ্যাঞ্জেলস থেকে সোজা পাকিস্তানের দাদুতে নামেন তিনি। এ সময় তিনি সেখানে বেশকিছু দুর্গত মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি জানায়, দুর্গতদের প্রয়োজন জানতে এবং অভিযোগগুলো আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দিতেই পাকিস্তানে অ্যাঞ্জেলিনা। এর আগেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় একাধিকবার পাকিস্তান গিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক স্তরে দুর্গতদের কষ্টের কথা পৌঁছে দিতে বরাবরই সচেষ্ট এই অভিনেত্রী। একটানা ভারি বৃষ্টিতে বন্যার কবলে পাকিস্তান। বন্যায় পাকিস্তানের ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের এক তৃতীয়াংশ এখনও পানির নিচে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫১ জন শিশু এবং ৩১৮ জন নারী। বন্যার কারণে সেখানে পানিবাহিত রোগের সংখ্যা বেড়েছে। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, বন্যার পানি নামতে থাকার পর রোগ ছড়িয়ে পড়তে থাকায় ‘দ্বিতীয় আরেকটি বিপর্যয়ের’ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে মঙ্গলবার সতর্ক করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তারা জানায়, আরও অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হওয়ায় পানিবাহিত রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বন্যায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সিন্ধ প্রদেশের। সেখানে পানির জোগান পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতেই নিত্যনৈমিত্তিক কাজ করছেন তারা। এ বছর দীর্ঘমেয়াদি বর্ষার কারণে পাকিস্তানে এমন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এবার গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল সাধারণ সময়ের চেয়ে ৩ গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যার ফলে যে হারে বিপুল এলাকা প্লাবিত হয়েছে তাতে সেখানে বন্যার পানি নামতে অন্তত ৬ মাস লাগতে পারে। এর আগে ২০১০ সালের বন্যার সময় পাকিস্তান গিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা। ২০০৫ সালে ভূমিকম্পের পরও সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তন, মানবিক সংকট এবং দুর্গতদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতেই এবারও পাকিস্তানে বন্যার্তদের পাশে এই হলিউড অভিনেত্রী।