ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মিরাজ। এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তার গণিত পরিক্ষা। বুধবার সন্ধ্যায় সে পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন সময় খবর আসে তার বাবা আর নেই। আখাউড়া পৌরশহরের দেবগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা মিরাজের বাবা মোতাহার হোসেন খান হাসান হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় নিজবাড়িতে মারা যান। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। শোক বার্তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়। বাবার সাথে তার শেষ কথা হয় বুধবার সকালের দিকে। বাবার শেষ কথা ছিল ভালো করে পরীক্ষা দিবে। তোমার জন্য দোয়া রইল। বাবার কথাগুলো এখনও তার কানে বাজে। নিজেকে কিছুতেই শান্তনা দিতে পারছেন না। বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন।
মিরাজ সারা রাত বাবার লাশের কফিনের পাশে বসে দোয়া পড়ে। সকালে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের অনুরোধে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুটে যান। যাওয়ার সময় মিরাজ
বাবার নিথর কফিন ছুঁয়ে দোয়া নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা দেখে অনেকেই অশ্রু ধো রাখতে পারেনি। মিরাজের সহপাঠি রুবেল জানায় মিরাজ অত্যান্ত মেধামী ছাত্র, পরীক্ষা দিতে বসেও সে তার বাবার জন্য কান্না করছিল। এ সময় হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও অন্য সহপাঠিরা তাকে শান্তনা দেয়।
আখাউড়া পৌরশহরের দেবগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা মোতাহার হোসেন খান হাসান (৪৫) আখাউড়া গ্রীন ভ্যালী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। বুধবার বিকালে পরিবারের লোকজনের ডাকাডাকিতে তার ঘুম না ভাঙ্গলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আখাউড়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ বাবুল মিয়া জানান, হাসান খুব ভালো মনের মানুষ ও শিক্ষানুরাগী ছিল। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি আরো জানান, পরিবারের সিদ্ধান্তে বাদ আছর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে।