অনিয়মই নিয়মে পরিণত করেছেন দেওয়ানগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা। দেওয়ানগঞ্জে উপজেলার কান্দির গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মুখেলেছুর রহমান পলাশ নামে এক সহকারী শিক্ষককের বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করে অনলাইন জরিপ বার্ণিজ্যসহ নিজ কর্মস্থল পাঠদান বছরের পর বছর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে,সরকারি ডেপুটেশন বা বদলী নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্তা না করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মুখেলেছুর রহমান পলাশকে দিয়ে প্রায় তিন বছর যাবত দেওয়ানগঞ্জে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান না দিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করিয়ে আসছেন।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষা অফিসের জনবল সংকটের কথা বলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার গত তিন বছর আগে মৌখিক নির্দেশে কান্দির গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক মুখলেছুর রহমান পলাশকে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের অনলাইন তথ্য প্রেরণের জন্য শিক্ষা অফিসে ডেকে মাঝে মধ্যে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করিয়ে নিতেন। এই সুযোগে ওই সহাকারী নিজ কর্মস্থল কান্দির গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত করে শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সরকারি বেতন ভাতা ভোগ করছেন।
এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে,শিক্ষা অফিসের আদেশ সংক্রান্ত সরকারের গুরুত্ব পূর্ণ তথ্যবলী চিঠি জেনে ওই সহাকারী শিক্ষক পলাশ অনলাইন জরিপ সংক্রান্ত শিক্ষকদের সাথে চুক্তি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অথচ প্রতিষ্ঠানের ঘর দোয়ার কিছুই নেই এমন সাইন বোর্ড সর্বস্ব প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনলাইন জরিপ বাণিজ্য করছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকরা জানিয়েছেন।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসে গত বৃহস্প্রতিবার খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, গত ২১এপ্রিল/২২ইং তারিখে শিক্ষা অফিসে ওমর ফারুক নামে একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর যোগদান করলেও কান্দির গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক মুখেলেছুর রহমান পলাশ স্কুল ফাঁকি দিয়ে শিক্ষা অফিসে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
গত বৃহস্প্রতিবার শিক্ষা অফিসে তথ্যসংগ্রহ করতে গেলে উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষার অফিসার আ: হালিমের সাথে তাকে ঘোরা ঘোড়ি করতে দেখা দেখা গেছে। এ ব্যাপারে অভিযোক্ত শিক্ষক পলাশের সাথে শিক্ষা অফিসে বরান্দায় দেখা হলে তার সাথে কথা বলতে চাইলে সেই পরে কথা বলবে বলে শিক্ষা অফিসারে সাথে বেরিয়ে যান।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আ: হালিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি গত ৬/৭ মাস আগে দেওয়ানগঞ্জে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে এসেছেন। এর আগে কি হয়েছে তার জানা নেই।
পলাশের নিজ কর্মস্থল ফাঁকি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান,সেই তো তার স্কুলেও যায়। মাঝে মধ্যে তাকে অফিসের অনলাইন ডাটা প্রেরণ কাজের জন্য শিক্ষা অফিসে আনা হয়। তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অফিসের অনলাইন জরিপ তথ্য প্রেরণ সংক্রান্ত বিষয়ে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কিছু জানেনা। তিনি এখন জোম মিটিংয়ে রয়েছেন বলে পরে কথা বলবেন বলে জানান।
এব্যাপারে কান্দির গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানে সহাকারী মুখেলেছুর রহমান পলাশসহ ৬জন শিক্ষক রয়েছেন। মুখেলেছুর রহমান পলাশ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হয়। কিন্তু র্শিক্ষা অফিসার অফিসের কাজের জন্য তাকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে নিয়ে গেলে তার করার কিছুই নেই। তিনি বিদ্যালয়ে এসে নিয়মিত কার ক্লাস নিলে ভালো হতো।