আগামী ১৭ অক্টোবর ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতা পিরোজপুরের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হলেন সালমা রহমান হ্যাপী বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিনে পিরোজপুরে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালমা রহমান হ্যাপী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক মহিউদ্দিন মহারাজ, ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল্লাহ আল মাসুদ, নেছারাবাদ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মোসাঃ হাসিনা মনি, শহিদুজ্জামান সিকদার এবং আমির হোসেন। পরে গত রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মনোনয়নপত্র বাছাই কালে হলফনামায় ত্রুটি থাকায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুজ্জামান সিকদার ও আমির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। অবৈধ মনোনয়নপত্রগুলো চ্যালেঞ্জ করেও তাদের মনোনয়নের বৈধতা পান নি। গতকাল বরিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারে শেষ দিনে সংবাদ সম্মেলনে করে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক মহিউদ্দিন মহারাজ। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালমা রহমান হ্যাপী এর পক্ষে কাজ করার ঘোষনা দেন। এ ছাড়াও একই দিন বাকী দুই স্বতন্ত্র প্রাার্থী নেছারাবাদ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মনি ও ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন। জেলা রির্টার্নি কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমান জানান, সকল প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালমা রহমান হ্যাপী একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত প্রার্থী হিসাবে অনুষ্ঠানিক ঘোষনার অপেক্ষায়। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত দেশের একমাত্র নারী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনয়ন পেয়েছেন সালমা রহমান হ্যাপী। তিনি পিরোজপুর জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদিকা এবং পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ এ. কে. এম. এ. আউয়াল, পিরোজপুর পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ¦ হাবিবুর রহমান মালেকের সেঝো ভাই পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের স্ত্রী। তিনি ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পিরোজপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনকারী তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদ ওমর ফারুকের ছোট বোন। পিরোজপুরের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী সালমা রহমান হ্যাপী বলেন, ‘ আমি ও আমার পুরো পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমার বড় ভাই তৎকালিন পিরোজপুর মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদ ওমর ফারুক পাকিস্তানীদের হাতে শহীদ হন। ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন প্রথম পিরোজপুর এসে আমার বাবার সঙ্গে কথা বলেন, তিনি আব্বাকে জিজ্ঞেস করেন কী চান ? আব্বা বলেছিলেন, দেশের জন্য ছেলে শহীদ হয়েছে। আমার চাওয়ার কিছু নেই। তখন বঙ্গবন্ধু তাঁর গায়ের কোটটি খুলে আব্বাকে পরিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে আমার (সালমা) বিয়ের সময় আব্বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি স্টিলের আলমারি উপহার পাঠিয়েছিলেন। সেটা এখনো আমার বাসায় আছে। প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আমাকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আরো জানান, আমি নির্বাচিত ঘোষনা হওয়ার পর জেলার সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা পরিষদকে সুন্দর করে সাজাতে কাজ করবো।