রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার জিএমএস জাফরউল্লাহ্, এনডিসি বলেছেন, আমাদের তথ্য না দেয়ার ঔপনিবেশিক মানসিকতা দূর করতে হবে। কারণ, জনগণের অনেকগুলো অধিকারের মধ্যে সঠিক তথ্য পাওয়া হচ্ছে এক অন্যতম অধিকার। একজন ব্যাক্তি মানুষ হিসেবে কী কী অধিকার ভোগ করতে পারবে, রাষ্ট্র কী কী অধিকার তার জন্য নিশ্চিত করেছে সে সম্পর্কে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। এ কারণে আমরা সুন্দরভাবে সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করতে পারি।’
‘তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজশাহী বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি উদ্যাপিত হয়। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোতে ২০০২ সাল থেকে দিবসটি উদ্যাপিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদেরকে অধিকারবঞ্চিত করে রেখেছিল। এরপর ১৯৭১ সালে ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি বাংলার মানুষের অধিকার চাই’। আর তখন থেকেই অধিকার শব্দটি আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। যে কারণে এখন আমরা সব মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারছি। আমরা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা পাঁচ্ছি। কিন্তু এখন এর সঙ্গে ডিজিটাল ও আধুনিক বাংলাদেশে তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তবে এটা থেকে আমরা খুব বেশি দূরে নেই। সরকার ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন প্রবর্তন করেছে; ফলে এই আইনটিও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কী ভাবে কাজ করছে, তা এই আইনের মাধ্যমে দেশের একজন নাগরিকের জানার সুযোগ তৈরি করেছে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগ করে আমরা আটটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্য অফিসগুলো থেকে জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। যদি কোনো অফিস তথ্য না দেয়, তা হলে সেটা এই আইনের অধীনে অপরাধ বলে গণ্য হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও তথ্য কমিশনে আবেদনের সুযোগ রয়েছে।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. অলিউল আলম।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. রশিদুল হাসান ও পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন। সভায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।