ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শুকুরন বেগম (৫৫) নামের এক নারী নিহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাতিজা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বংকুরা গ্রামের। সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শুকুরন বেগম ওই গ্রামের ভ্যানচালক হারুন তালুকদারের স্ত্রী। হামলায় আহত নিহতের স্বজন শিল্পী বেগম (৪০), মিনার বেগম (৪০), আবু হানিফ বয়াতী (২২) ও স্কুল ছাত্রী মনিকা আক্তারকে (১৫) বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। পাশাপাশি নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার বাদি নিহতের ভাতিজা আবু হানিফ বয়াতী অভিযোগ করেন, একই গ্রামের সৌদি প্রবাসী বারেক বেপারীর জমির পাশের ঘাস কেটে নেয়ার অভিযোগে গত মঙ্গলবার তার বাবা দুলাল বয়াতী ও ফুপু শুকুরন বেগমের সাথে প্রতিবেশী বারেকের স্ত্রী রিনা বেগমের ঝগড়া হয়। এ ঘটনার জেরধরে ওইদিন সন্ধ্যায় রিনা বেগম তার (হানিফ) বাবা দুলাল বয়াতীকে জুতা পেটা করে। পরে আবারও রিনা বেগম প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তার মেয়ে জামাতা আশোকাঠী গ্রামের নাসির কাজীকে খবর দেয়। নাসির কাজী তাদের এলাকার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী সজিবুর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী নিয়ে বুধবার রাতে তাদের (হানিফ) বাড়িতে হামলা চালায়।
সূত্রমতে, হামলাকারীরা দুলালের বোন শুকুরন বেগম, নিকট আত্মীয় মিনারা বেগম, দুলালের স্ত্রী শিল্পী বেগম, ছেলে আবু হানিফ বয়াতী ও মেয়ে স্কুল ছাত্রী মনিকা আক্তারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এ সময় দুলালের বসত ঘর ভাংচুর করা হয়। আহতদের রাতেই গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকেরা শুকুরন বেগমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা আবু হানিফ বাদী হয়ে ১৫ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকেই হামলার সাথে জড়িত আশোকাঠী, চন্দ্রহার ও বাটাজোর এলাকার চিহ্নিত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা নিজ এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেছে। অপরদিকে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে ওইসব ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের সেল্টারদাতারা নানা তৎপরতা শুরু করেছে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এরপূর্বে সন্ত্রাসী সজিবুর রহমান জিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কালিয়া দমন গুহর কনিষ্ঠ ছেলে যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টুকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। সম্প্রতি সময়ের ইউপি নির্বাচনে বাটাজোর ইউনিয়নের এক প্রার্থীর পক্ষে সন্ত্রাসী জিয়া ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালের সামনে তার (জিয়া) নামেমাত্র প্যাথলজি ব্যবসার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসকদের জিম্মি করে রাখার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও এক যুবতীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের ঘটনায় ফেঁসে গিয়ে তাকে (যুবতী) বিয়ে করতে বাধ্য হয় সন্ত্রাসী জিয়া। এলাকাবাসী সন্ত্রাসী জিয়াকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।