চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে অন্য বছরের তুলনায় এবার আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ধানের দাম ও ফলন বেশি হওয়ার কৃষকরা খুশি। আগামী আউশ মৌসুমে বেশি জমিতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠবে কৃষকরা। আর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এই মৌসুমে ধানের উৎপাদন বেশি হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন।
গোমস্তাপুর উপজেলার আট ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন মাঠে শেষ মুহুর্তে আউশ ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অল্প খরচে বেশি ধান পেয়ে সফলতা দেখাচ্ছে তাঁরা। রোগবালাই কম ও সময়মত বৃষ্টি হওয়ার ভাল ফলন পেয়েছে। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান বেশি উৎপাদন হচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। ধান কেটে অনেক কৃষক রোপা আমনসহ মাসকালাই জমিতে বপণ করতে দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে ছয় হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে জিরা এক হাজার ৩৯০ হেক্টর, ব্রিধান-৪৮ তিন হাজার ৮৩০ হেক্টর, ব্রিধান-৫৫ সাতশ ৫০ হেক্টর, ব্রিধান-৮৫ একশ ২০ হেক্টর, ব্রিধান-১০০ একশ হেক্টর, বিনাধান-১৯ পাঁচশ ৪০ হেক্টর, বিনাধান-২১ একশ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। তবে আউশের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আশানুরূপ। তাই আগামী মৌসুমে আউশ ধান চাষাবাদে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবেন কৃষকরা।
রহনপুর পৌর এলাকার প্রসাদপুর মহল্লার কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, আগে আউশ ধানের ফলন না হওয়ার কৃষকরা তেমন আবাদ করতেন না। এবার তিনি সাড়ে তিনবিঘা জমিতে আউশধান করেছেন। ফলন বেশি হওয়ার ও ধানের দাম বেশি পাওয়ায় তিনি খুশি। কম খরচে বেশি ধান পাওয়া আগামী বছর আবাদ বাড়িয়ে দিবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল,সেবলু, নুর, বার্নাট রোজারিও,বাবুল,কালামসহ অনেকে জানিয়েছেন ভাল ফলন হয়েছে। আবাদে যা খরচ করেছি তাঁর চেয়ে বেশি আয় হবে। আগে ফলন কম হত এখন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদ করে বেশি উৎপাদন হচ্ছে।
রহনপুর পৌরসভা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকীবউদ্দীন বলেন, কৃষকদের সঠিক সময়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ধান ২০ থেকে ২২মণ। দেশী জাতের ধান ১৩ থেকে ১৫ মণ উৎপাদন হয়েছে। চলতি আউশ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বেশি ফলন পেয়েছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, এ বছর আউশ ধানের ভাল ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে এক হাজার পাঁচশ কৃষককে কৃষি প্রণোদনার ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে। তাঁদেরকে সবসময় উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া মাঠ দিবসসহ সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে পরামর্শ দিয়েছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন ছিলনা। এতে কৃষকরা অধিক ফলন হয়েছে। আগামীতে কৃষকরা আরোও আউশ ধানের আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠবে।