রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫ ইউনিয়নেই বাল্য-বিয়ের হিড়িক পড়েছে। নানামূখী অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্টারদের বিরুদ্ধে। ভূক্তভোগী মহলের অভিযোগ সম্প্রতি এসব নিকাহ রেজিস্টার বাল্য বিয়ে নিবন্ধনে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। শুধুমাত্র কাবিলপুর ইউনিয়নেই নিকাহ রেজিষ্ট্রার সাকোয়াত হোসেন গত দু’মাসে এক ডজনেরও বেশি বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আজমপুর গ্রামের চাঁন মিয়া আকন্দের কন্যা তানিয়া আকতার,(আজমপুর ফকিরপাড়া) ফজলুল হক এর কন্যা ফারজানা খাতুন (আজমপুর মন্ডল পাড়া) তারা মিয়ার কন্যা শারমিন আকতার (চক-শোলাগাড়ি) মাধ্যমিক পর্যায়ে অধ্যায়নরতা এই সকল ছাএীদের বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করে তিনি নির্ধারিত ফির চাইতে অনেক বেশি অঙ্ক নিয়ে নিবন্ধন বহিতে নাম উঠিয়েছেন। প্রাপ্ত বয়স্কা না হওয়া পর্যন্ত নিকাহের কাবিননামার নকল সরবরাহ না করায় অভিভাবক মহলে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাছাড়া, ইতঃপূর্বে চক-শোলাগাড়ি গ্রামের লোকমান হোসেনের মেয়ে চম্পা আকতারের বাল্য বিয়ে নিবন্ধন করে দিলেও সেখানে চম্পার সংসার ভেঙ্গে যাওয়ায় গত ২৮ অক্টোবর একই বৈঠকে পূর্বেকার স্বামী কে ডিভোর্স নিবন্ধন সম্পন্ন করে একই বৈঠকে অন্যত্র বিয়ে নিবন্ধন করেন। যা রীতিমত বে-আইনী। প্রচলিত আইনে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নিকাহ রেজিষ্টারদের কর্মরত থাকার বিধান নেই। অথচ ওই নিকাহ রেজিষ্ট্রার একই ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর হাজী কলিম উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসায় এবতেদায়ী প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর ইনডেক্স নং আর-৩৭৯৮২০। প্রত্যেক নিকাহ রেজিস্টারের জন্য একজন করে অফিস সহকারী রাখার বিধান থাকলেও উপজেলার কোন নিকাহ রেজিষ্ট্রার তা মনছেন না। বরং উল্টো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের অধীনে একাধিক সাব-কাজী বা নিকাহ রেজিস্টার নিযুক্ত করে তাদের প্রত্যেককে পৃথক পৃথক নিবন্ধন বহি সরবরাহ করেছেন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে,পীরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্ট্রার ৩ বছর পুবে মারা গেলেও তার নামে দুই ছেলে এবং এদের নিয়োগ দেয়া আরও ৩ জন সাব কাজী নিকাহ রেজিষ্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন। বড়দরগাহ.কুমেদপুর ও মদনখালী, ইউনিয়নে দায়িত্বরত নিকাহ রেজিষ্ট্রারদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমলেও কোন প্রতিকার হয়নি। বিধান রয়েছে,নিকাহ রেজিস্টারদের নিজ ইউনিয়নে কাজী অফিস স্থাপন পূর্বক সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়ার। গোটা উপজেলায় ভিন্ন চিত্র। কোথাও কোন সাইন বোর্ড নেই। কাজীদের কারবার দেখে মনে হয় এসব দেখাশোনার দায়িত্বে কেউ নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিরোদা রানী রায় বলেন-আমার কাছে এ ধরনের কোন অভিযোগ নেই।