জেলার গৌরনদী উপজেলার মৌরি ক্লিনিকের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে ইয়াসমিন বেগম (৩৩) নামের পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা গৃহবধুকে অপচিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ওই ক্লিনিকেই ভর্তি রয়েছেন গৃহবধু।
শুক্রবার সকালে গৃহবধু ইয়াসমিন বেগম বলেন, গর্ভে বাচ্চা ধারনে পূর্ব থেকেই বরিশাল থেকে মৌরি ক্লিনিকে আসা চিকিৎসক শাহনাজ শিমুলের মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছি। গত শুক্রবার শরীর পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য ওই চিকিৎসকরে সরনাপন্ন হই। এ সময় সে (চিকিৎসক) রক্ত ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আমাকে জানায় গর্ভের বাচ্চা মারা গেছে। পরবর্তীতে ওই চিকিৎসক আট হাজার টাকার বিনিময়ে মৌরি ক্লিনিকে আমার ডি অ্যান্ড সি (ডায়লেশন অ্যান্ড কিউরাটেজ) করেন।
ওই গৃহবধু আরও বলেন, গত সোমবার ক্লিনিক থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পূর্বে পূনরায় ওই ডাক্তারের কাছে যাই। এ সময় পূনরায় আমার আল্ট্রাসনোগ্রাম করে চিকিৎসক বলেন, আপনার গর্ভের বাচ্চা বড় ছিলো তাই ডি অ্যান্ড সি তে কাজ হয় নাই। পেটের মধ্যে বাচ্চার অংশ রয়ে গেছে অবস্থা খারাপ এখন অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা বের করতে হবে। পরবর্তীতে ওইদিন রাতে ছয় হাজার টাকার কন্ট্রাকে অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চার অংশ বের করেন ওই চিকিৎসক।
ওই গৃহবধুর দেবর মোঃ রকিব সরদার অভিযোগ করে বলেন, শারিরিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার পরও একবার ডি অ্যান্ড সি এবং আরেকবার সিজার করতে হয়েছে। ডাক্তারের অপচিকিৎসার কারণে অতিরিক্ত টাকা খরচের পাশাপাশি আমাদের ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে। ক্লিনিকে এসব অপচিকিৎসা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি দাবী জানান।
অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে ডাঃ শাহনাজ শিমুল জানান, ওই রোগীর বাচ্চার বয়স সাড়ে চার মাস ছিলো। জরায়ুর মুখ অতটা খোলা ছিলোনা। এরপরও ওষুধের মাধ্যমে বাচ্চা বের করা চেষ্টা করেছি। রোগীর সম্মতি নিয়ে ম্যানেজম্যান্ট প্রটোকল অনুযায়ী কাজ করেছি। ম্যানেজম্যান্ট প্রটোকল বলতে কি বোঝাচ্ছেন জানতে চাইলে, তিনি (ডাক্তার) ওটির মধ্যে আছে জানিয়ে সামনাসামনি কথা বলবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে মৌরি ক্লিনিকের পরিচালক মুহিত শরীফ জানান, চিকিৎসক ভাবছিলেন ডি এ- সি করলে ওইটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তাইলে আর সিজার করা লাগবেনা। কিন্তু ডি এ- সি করতে যাইয়া দেখেন যে ক্লিয়ার হয় নাই। তিনি আরও বলেন, হয়তো রোগীর ভোগান্তি হতে পারে। কিন্তু রোগীর ভোগান্তির জন্য ডাবল চার্জ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলহাজ্ব ডাঃ মনিরুজ্জামান জানান, অপচিকিৎসার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ক্লিনিকগুলো মূলত দেখভাল করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জন। তারপরও রোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।