মুলাদীতে হামলা চালিয়ে স্বামী-স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় মামলা করতে প্রভাবশালীরা বাঁধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারীদের ভয়ে ঘটনার ১৫ দিনে মামলা করতে পারেনি আহতরা। গত ৫ অক্টোবর উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিয়াতলী গ্রামের নাদের শরীফের ছেলে আবেদ শরীফ ও তার স্ত্রী জিয়াসমিনের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। পার্শ্ববর্তী বাড়ির মজনু মীর ওরফে সৈয়দ জসিম উদ্দীনের ছেলে সোহাগ, সজিব মীর, সবুজ মীর ও শাহীন শরীফের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন আহতরা। ঘটনার পর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলা কিংবা অভিযোগ করতে পারেননি তাঁরা। অপরদিকে আবেদ শরীফের দাবি, টাকার অভাবে তাঁরা পর্যাপ্ত চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। আবেদ শরীফ জানান, মজনু মীর ওরফে সৈয়দ জসিম উদ্দীনের সাথে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। কয়েক দিন আগে মজনু মীর বিরোধপূর্ণ জমির একটি গাছ বিক্রি করে দেন। ৫ অক্টোবর দুপুরে ক্রেতারা গাছ কাটতে এলে আবেদ শরীফ বাধা দেন এবং জমি বিরোধের নিস্পত্তি হওয়ার আগে গাছ কাটতে নিষেধ করেন। এতে মজনু মীর ও তার ছেলেরা ক্ষিপ্ত হন এবং ওই দিন বিকেলে ৭/৮ জন লোক ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আবেদ শরীফের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা হাতুড়ি দিয়ে আবেদ শরীফের হাত-পা ভেঙে মারাত্মক আহত করেন। তাঁর ডাকচিৎকার শুনে স্ত্রী জিয়াসমিন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী গোসাইর হাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। হামলার পর পরই মজনু মীরের লোকজন আবেদ শরীফের বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এ সময় আবেদ শরীফের ঘর থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায় তাঁরা। আবেদ শরীফ আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে মজনু মীর ও তার লোকজন মামলা করতে দিচ্ছেনা। বিষয়টি স্থানীয় সালিশের নামে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছেন তারা। এ ছাড়া টাকার অভাবে ঢাকাতে চিকিৎসা না করাতে পেরে বাড়িতে চলে এসেছিলেন তারা। মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পরলে পুনঃরায় মুলাদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদের। এ ব্যাপারে মজনু মীর ওরফে সৈয়দ জসিম উদ্দীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলে বলেন, ‘গাছের বিরোধ ধরে আবেদ শরীফের স্ত্রী আমাকে মেরেছে। তাই আমার ছেলেরা আবেদ শরীফ ও তার স্ত্রীকে মারধর করেছে।’ মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস.এম মাকসুদুর রহমান বলেন, হামলার শিকার স্বামী-স্ত্রীকে আইনি সহায়তা দিতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।