দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগে ৭২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু আক্রান্ত রোগীদের উন্নত চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই বিভাগে।
এমনকি আক্রান্তদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড কিংবা গুরুত্বর অসুস্থদের প্লাটিলেট দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই বরিশালে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের আটটি সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা।
যদিও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্লাটিলেট দেওয়ার সেল সেপারেটর মেশিনের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে কবে নাগাদ সেই মেশিন বরিশালে আসবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ৫৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সূত্রমতে, বিভাগে আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ৪০৮ জন, বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ৭৭ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৫ জন, পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ২৪ জন, বরগুনা সদর হাসপাতালে ১৫৭ জন, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ৩৩ জন, ভোলা সদর হাসপাতালে ৮০ জন ও পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ১৯০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে ওইসব হাসপাতালগুলোতে ১৩৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যারমধ্যে অনেক গুরুত্বর অসুস্থ রোগী রয়েছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের উপণ্ডপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, শেষ পর্যন্ত বরিশাল ডেঙ্গু ঝুঁকিতে পরেছে। গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে ৭২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তদের সেবা দেয়ার সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। কোন রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগে ৭২ জন আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে। বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন রোগী।
শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার শাহরিয়ার হক জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের রক্তের প্লাটিলেট সর্বনিন্ম ৩০ হাজার থাকা প্রয়োজন। তার নিচে নামলেই রক্ত দিতে হয়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে বরিশালে প্লাটিলেট দেয়ার সেল সেপারেটর মেশিন নেই। তাই যাদের প্লাটিলেট পরিবর্তন করাতে হয় তাদেরকে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, প্লাটিলেট দেওয়ার সেল সেপারেটর মেশিনের চাহিদা শেবাচিম হাসপাতালের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মেশিনটি পাওয়া গেলে এ অঞ্চলের মানুষ আরো দ্রুত সেবা পাবেন। তবে এখনো তারা (রোগী) সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।