কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামের জমি মহাপরিচালক এর অনুমোদন ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানায় বিক্রি করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই জমি উদ্ধারে বিগত ২৮ বছরেও প্রশাসনিক ভাবে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
জমির দলিল সূত্রে জানা যায়, ২৮/৪/১৯৯৩ ইং সালে মোছাঃ ফিরোজা খাতুন,জজে মোঃ নজরুল ইসলাম, সাং -পুটিমারী কাজলডাঙ্গা, থানা-চিলমারী, জেলা- কুড়িগ্রাম তেত্রিশ শতাংশ জমি মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ ,ঢাকা বরারবরে বহরের ভিটা বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য দানপত্র লিখে দেন। দলিল নং- চিলমারী নং- ৮১৯/৯৩, মৌজা পুটিমারী, জেএল নং-৮, খতিয়ান নং-এস,এ-৩০৪, দিয়ারা বুখ নং- ১৮৪, দাগ নং- সাঃ ১৬৫, দিয়ারা হাল নং- ৩০৩ দাগে জমি-৩৩ শতাংশ।
দাতার স্বামী মোঃ নজরুল ইসলাম সেই সময় ওই বহরের ভিটা বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। পরবর্তীতে দাতা মোছাঃ ফিরোজা খাতুন মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ ,ঢাকা এর কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে তার নিজ ইচ্ছায় একই জমি থেকে গত ৩০/৩/৯৪ ইং তারিখ জে এল নং-৮, খতিয়ান নং ১৫২২, হাল দাগ খতিয়ান নং-৩০৪, নতুন খতিয়ান নং-১৮৪, দাগ নং-১৬৫,নতুন দাগ- ৩০৩ দাগের সাড়ে ষোল শতাংশ জমি মোঃ বাদশা মিয়া, পিতা-মৃত নেছাব উদ্দিন, মৌজাথানা, থানা- চিলমারী, জেলা-কুড়িগ্রামের নিকট বিক্রি করে দেন। দলিল নং- চিলমারী নং-৫৯৬/৯৪ ইং।
জমিটি বহরের ভিটা বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেই অবস্থিত। স্কুলটি বর্তমানে সরকারি করণ করা হয়েছে। এদিকে জমির অভাবে স্কুলের নিজস্ব কোন মাঠ নেই এবং জমি না থাকায় সরকারি ভাবে কোন নতুন শিক্ষা ভবনও গড়ে তোলা সম্ভাব হচ্ছে না মর্মে শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে।
জমিদাতা ও বিক্রেতা মোছাঃ ফিরোজা খাতুন এখনও বেঁচে আছেন তবে তার স্বামী স্কুলটির সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম এখন বেঁচে নেই। ফিরোজা খাতুনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি বলেন,বাবা, মুই কিছু জানোও না। মুই মুর্খ মানুষ। মোর স্বামী বাঁচি থাইকতে কডে কডে মোর সই নিছে তাহো কবার পাঁও না। তয় একখ্যান জমি মোর নামত আছিল।
এ ব্যাপারে স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন জানিয়েছেন, যখন এই জমি বিক্রি করা হয় তখন তিনি স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ছিলেন না, সাধারন সহকারী শিক্ষক ছিলেন। কেন স্কুলের নামীয় জমি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেবার পর এত দিনেও উদ্ধারের চেষ্টা করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার কাছে কোন দালিলিক প্রমাণ ছিল না।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাঃ আবু সালেহ এর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, শিক্ষা কমিটির মিটিং এ উপস্থান করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানাছিল না। মাত্র জেনেছি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রয়োজোনীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা হবে।