ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা সফল হবে-কিনা- এ আশঙ্কা থেকে একের পর এক তরুণ ও নির্ভিক সাংবাদিক এম এ আজিমের ওপর হামলার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিপক্ষ তাদের দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলাকে পুঁজি করে বারবার তার ওপর হামলার চেষ্টা চালিয়ে উল্টো তাকেই সমাজের কাছে দোষি সাব্যস্ত করার নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট আদালত চত্বরে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার পরই জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বারান্দায় সাক্ষী শহিদ শেখ কর্তৃক প্রকাশ্যেই সাংবাদিক এম এ আজিমের ওপর চড়াও হয়ে তার ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই বাগেরহাট সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়রী করা হয়েছে।
এম এ আজিম খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রবাহ’ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও জাতীয় দৈনিক ‘নয়া শতাব্দি’র রূপসা সংবাদদাতা এবং এফএনএস অনলাইন পোর্টাল (ফেয়ার নিউজের) রূপসা সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি রূপসা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (এমইউজে) সদস্য।
এদিকে, এ ঘটনায় সাংবাদিক সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ ঘটনায় আদালতের প্রতি আস্থা না রেখে আইন হাতে তুলে নেয়ার শামিল বলে উল্লেখ করেন তারা। অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। জানা গেছে, রামপাল উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা খাজা মঈন উদ্দিন আক্তার ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আততায়ীর হাতে নিহত হন। ওই মামলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাংবাদিক এম এ আজিমকে আসামি করা হয়। সাংবাদিক এম এ আজিম গত ২৩ অক্টোবর ওই মামলায় হাজিরা দিতে বাগেরহাট বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যান। বেলা ১১ টা ৫৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিক এম এ আজিম হাজিরা শেষে বের হওয়ার বিজ্ঞ আদালতের বারান্দায় তার পরিচিত ওমর ফকির নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কুশল বিনিময় করছিলেন। এ সময় একই মামলার সাক্ষী রামপাল উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে সন্ত্রাসী শহিদ শেখ (৪৫) কোন কারণ ছাড়াই প্রকাশ্য দিবালকে সাংবাদিক এম এ আজিমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে একপর্যায়ে সে তাকে মারতে উদ্যত হয়। এমনকি জীবনে শেষ করে দেওয়ার হুমকিও প্রদান করে। এ সময় সেখানে থাকা জুনিয়র আইনজীবী এ্যাড: রবিউল ইসলাম রবি ও মহুরী আবদুল জব্বারসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। তাদের হস্তক্ষেপে শহিদ শেখ নিবৃত হয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড: মাহফুজুর রহমান লাহু’র চেম্বারে নিয়ে যান তারা। এ ঘটনায় ওইদিনই তিনি শহিদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়রী করেন।
এর আগেও চলতি বছরের গত ১ এপ্রিল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে মায়ের অসুস্থতার কথা জেনে পেশাগত কাজের ব্যস্ততার মধ্যে মাকে দেখার জন্য এবং পবিত্র রমজান মাসের সেহেরি এবং ইফতারি’র বাজার গ্রামের বাড়িতে দিতে গিয়ে রামপাল উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের বালিয়া ভিটা স্কুলের পাশে দোকান থেকে চাল ক্রয় করে ভ্যানযোগে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার পর হঠাৎ করে ওই মামলার স্বাক্ষী সন্ত্রাসী শহিদ ওই স্থানে এসে তাকে নজরদারি করে তার সহযোগীদের নিয়ে তাকে ক্ষতি করার জন্য এলাকায় মোটরসাইকেল মহড়া এবং এলাকা থেকে সাংবাদিক আজিম কোনভাবে বের হতে না পারে সেই অপচেষ্টায় তারা এলাকায় অবরূদ্ধ করে রাখে। মুহুর্তের মধ্যে সাংবাদিক আজিমের কর্মস্থল পত্রিকা অফিসের সিনিয়র সাংবাদিকদের ফোন করে বিষয়টি জানালে বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি প্রেসক্লাবের কর্মরত সাংবাদিকরা ওই এলাকা থেকে ওইদিন সন্ধ্যায় উদ্ধার করে তার কর্মরত এলাকা খুলনায় পৌঁছে দেয়। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা ক্ষতি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বিষয়টি ওই এলাকার সাধারণ মানুষ জানলেও এই সন্ত্রাসী শহিদদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায়না। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত সাংবাদিক আজিম ওই সন্ত্রাসী শহিদ বাহিনীর অত্যাচারের কারণে তার গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেনা। ওই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গত ৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। সন্ত্রাসী শহিদ এলাকায় র্যাব শহিদ হিসেবে পরিচিত। তার বিরূদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসন তদন্ত করে খতিয়ে দেখলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীর দাবি। সাংবাদিক এম এ আজিম অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসী শহিদের নেতৃত্বে তার ভাই আবদুল হাকিমকে হত্যা করা হয়। কিন্তু ভয়ে আমরা ওই সময় মামলা করতে পারিনি। এখন আমাকেও সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা খাজা মঈন উদ্দিন আক্তার হত্যা মামলায় সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক ও সন্দেহজনকভাবে জড়ানো হয়েছে। এমনকি ঘটনার সময় (২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি) আমি পূর্ব রূপসায় একটি কম্পিউটারের দোকানে পেশাগত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তারপরও আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি। একই সঙ্গে আইন মেনে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছি। তারপরও সন্ত্রাসী শহিদ বারবার আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় আমি এবং আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এ বিষয়ে আমি ন্যায় বিচার আশা করছি।
এদিকে বাগেরহাটে ষড়যন্ত্রমূলক আক্তার হত্যা মামলায় হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার পর আদালতের বারান্দায় মামলার সাক্ষী কর্তৃক রূপসা প্রেসক্লাবের সদস্য এম এ আজিমের ওপর হামলার প্রচেষ্টা ও জীবন নাশের হুমকির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রূপসা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিদাতার হলেন ক্লাবের সভাপতি এস এম মাহবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি খান মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল সেন, সাবেক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বিষ্ণু, সাইফুল ইসলাম বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম ডালিম, সহ-সম্পাদক আল মাহমুদ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ এমডি অলিদ শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক খান আবদুল জব্বার শিবলী, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক হামিদুল হক।
এছাড়াও অনুরূপ বিবৃতি দিয়েছেন, রূপসা উপজেলা অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের নির্বাহী সদস্য এম এ আজিমের ওপর হামলার প্রচেষ্টা ও জীবন নাশের হুমকির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রূপসা উপজেলা অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতারা হলেন-রূপসা অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম তোতা, সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ গোলাম মোস্তফা, সহ-সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন পপি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বেনজীর হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন মানিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাঈমুজ্জামান শরিফ, অর্থ সম্পাদক বি এম শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, প্রচার সম্পাদক চিত্ত রঞ্জন সেন, দপ্তর সম্পাদক রেজাউল ইসলাম তুরাণ, নির্বাহী সদস্য তরিকুল ইসলাম ডালিম, সাধারণ সদস্য আল মাহমুদ প্রিন্স, আবু হারুনার রশিদ, তরিকুল ইসলাম, আবদুল জব্বার শিবলী, আশিকুজ্জামান বাবু, চন্দন ভট্টাচার্য।