রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সদ্য নির্মিত একাধিক ঘর ফাটল ধরেছে। এজন্য আতংকের মধ্যে বসবাস করছেন এসব ঘরের বাসীন্দারা। পীরগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, চতরা ইউনিয়নের বড় ভগবানপুর গড় পাড়ায় আদিবাসীদের ২৫ টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০ ঘরে ফাটল ধরেছে। একই ইউনিয়নের চন্ডিদুয়ার গ্রামের ২৫ টি ঘরের মধ্যে ৮ টিতেই ঘরে ফাটল ধরেনছে। পাকা মেঝেতে ইঁদুর গতৃ করে বাসা বেধেছে। আবার বাতাসে টিনের চালা উড়ে গেছে কোথাও। অভিযোগ রয়েছে,নিম্ব মানের কাজ সম্পন্নের কারনেই এ অবস্থ্রা সৃষ্টি হযেছে। তাছাড়া ঘরের দেয়ালে সাদা চুন ওরং করা হয়েছে দায়সারা ধরনের। স্থানীয়রা বলছেন, ২০২০ -২০২১ অর্থ বছরের আশ্রয়ণ প্রকল্পণ্ড২,এর কাজে দায়সারা ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। নির্মিত ঘরগুলোতে নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার ও প্রাক্কলনে অনেক ফাঁকি দেয়া হয়েছে। এাড়াও মিস্ত্রী ও লেবারদের হাতের কাজেও নাান ধরনের ফাঁকি ছিল।একটি সুত্র দাবি করেছে,মিস্ত্রীদের একটি দল সাব ঠিকা নিয়ে কাজ সম্পন্ন করেছে। যে কারণে তারা বেশি মুনাফার লোভে কাজে সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে। বড় ভগবানপুর গ্রামের লুকাস হেমরোম বলেন, সরকারের দেয়া উপহার ঘর পেয়ে তিনি খুশি কিন্তু নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে ঘরগুলোতে। তাদের গড় পাড়ায় ২৫ টি ঘর দেয়া হয়েছে এর মধ্যে ১০ টি ঘরের পিছনের দেয়াল ফাটল ধরেছে। কখন যেন ভেঙ্গে পড়ে যায়। এই আশংকায় দিন কাটছে তাদের। বৃষ্টি বাদলের সময় ঘরে পানি পড়ে। এজন্য বৃষ্টির সময় ঘরে বসে থাকতে হয়। একই এলাকার পাতরাস কিসকু বলেন, সরকারি ঘরের খোঁজখবর কেউ নেয় না। ঘর নির্মাণের আগে রাস্তা নির্মাণ করার কথা ছিল,তাও করা হয়নি। যাতায়াতের ব্যবস্থাও ভাল নয়। ঘর বরাদ্দ পেয়েও অনেকে সুখী নন। তাছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ঘর বরাদ্দ দিয়েই তাদের দায়িত্ব সেরেছেন। পরবর্তীতে আর কোন ধরনের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না। চন্ডিদুয়ার গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, সরকারি ঘর পেয়ে তারা খুশি কিন্তু ফাটল ধরা ঘরে বাস করতে ডর করছে। জোড়াতালি দিয়ে ফাটল বন্ধ করা হলেও কোন কাজ হয়নি। একই এলাকার আয়নাল হক বলেন, ঘর বানানোর আগে মাপ যোগ করা হয়েছে। অথচ এখনো যাতায়াতের রাস্তা করে দেয়া হয়নি। আশ্রয়ণ কেন্দ্রে এসে তারা অনেক জুকিতে রয়েছে। রাস্তা মেরামতের অভাবে ২৫ পরিবারের অনেক কষ্টে দিন কাটছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসনীন্দারা সকলে নিম্নবিত্ত। অনেকেই ভ্যান চালায়। শ্রম বিক্রি করেও অনেকে সংসার চালায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারণে রিক্সা-ভ্যান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন কেউ কেউ। স্থানীয় সচেতন মহল জানান, বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উপলক্ষে ভুমিহীনদের ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সে ঘরের ঠিকাদার উপজেলা প্রশাসন। যে কারণে এসব কাজের মধ্যে নানামুখী অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হলেও কোন তদারকী ছিল না। নিম্নমানের কাজে বাধা দিয়েও কেনো কাজ হয়নি। উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মিত ঘরগুলো জরুরী ভিত্তিতে তদন্তের দাবি করেছেন একাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসীন্দা।