আশাশুনি উপজেলার শোভনালীতে জুয়ার আসর বন্ধ করতে গিয়ে এক ইউপি সদস্যকে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিপাকে পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশী অভিযানে জুয়াড়ীরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছে।
সরেজমিন গেলে এলাকাবাসী জানান, ইউনিয়নের কামালকাটিতে শ্যামাকালি পূজা জাঁকজোমকের সাথে চলছিল। পূজা উপলক্ষে ২৭ অক্টোবর রাতে মনসা মঙ্গল যাত্রাপালা মঞ্চস্থ হচ্ছিল। পূজা কমিটির সভাপতি প্রদীপ বাছাড় ও সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার বিশ্বানের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ পূজা ও যাত্রাপালায় ধর্মপ্রাণ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যখন ব্যাস্ত। ঠিক তখন নির্জনে মন্দির থেকে অনুমান ১০০ হাত দূরে জুয়াড়ীরা জুয়ার আসর বসিয়ে জমজমাট খেলা চালাচ্ছিল। কোন বাধা তাদেরকে রোধ করতে পারছিলনা।
ইউপি সদস্য উদয় কান্তি বাছাড় জানান, তিনি পূজার আড়ালে জুয়ার আসর বসার খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। ওসি সাহেব দারোগা মারুফকে রাত্র ১১.৩০ টার দিকে পাঠালে তিনি (পুলিশ) তাদেরকে নিয়ে জুয়ার আসরে অভিযান পরিচালনা করেন। জুয়াড়ীরা বুঝতে পেরে দ্রুত দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। আয়ুব নামে একজন পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়লে পুলিশ তাকে আটক করে মেম্বারের জিম্মায় দেন। সে দর্শক বলে দাবী করলে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর মেম্বার বাসায় ফিরে যান। রাত্র ১২.৩০ টার দিকে এসআই ইমরান হোসেন পুনরায় পূজা-যাত্রাস্থলে আসেন এবং যাত্রা শেষ হওয়া পর্যন্ত ছিলেন। মেম্বার বলেন, তিনি জুয়ার আসর ভাঙ্গতে পুলিশকে সহযোগিতা করার অপরাধে পূজা কমিটির সেক্রেটারী অশোক বিশ্বাস তাদের বাড়িতে হামলা চালান, ভাংচুর, লুটপাট ও মহিলাদের উপর আক্রমণের মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ খাড়া করে পরদিন থানায় মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই নূর হোসেন ঘটনাস্থান পরিদর্শন ও তদন্ত করেছেন। এ ঘটনায় মেম্বার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগের নিন্দা জ্ঞাপনসহ সবকিছু পুলিশের সামনে হওয়ায় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
পূজা ও যাত্রা অনুষ্ঠানে চা এর স্টলে থাকা সাবেক মহিলা মেম্বার পূর্নিমা রানী জানান, তিনি পুরা সময় চা স্টলে ছিলেন, কোন মারামারি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে তার জানানেই।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, জুয়ার আসর বসেছে জানতে পেরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। পুলিশের আগমন টের পেয়ে আগে থেকেই জুয়াড়ীরা পালিয়ে যায়। তবে বিষয়টি তদন্ত করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অশোক কুমার বিশ্বাসের বাড়িতে হামলার অভিযোগে থানায় লিখিত এজাহার দাখিল হয়েছে। অভিযোগ তদন্তের কাজ চলছে বলে তিনি জানান।