এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপণ্ডবি’র শীর্ষ দল হিসেবে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে পোর্তো। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্লাব ব্রুজের সাথে গোলশুন্য ড্র কওের বায়ার লেভারকুসেন তৃতীয় স্থান লাভ করায় চতুর্থ দল হিসেবে ইউরোপিয়ান আসরের সব প্রতিযোগিতা থেকেই ছিটকে গেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। গত সপ্তাহে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হবার পর দিয়েগো সিমিওনের দলের আশা ছিল অন্তত তৃতীয়স্থান লাভ করে ইউরোপা লিগে জায়গা করে নেয়া। কিন্তু পর্তুগালে গত মঙ্গলবার রাতটা এ্যাথলেটিকোর ছিলনা। এ্যাথলেটিকোর সাথে সমান পাঁচ পয়েন্ট অর্জণ করে হেড-টু হেডে এগিয়ে লেভারকুসেনের তৃতীয় স্থান নিশ্চিত হয়েছে। এর আগে দুইবার ২০০৯-১০ ও ২০১৭-১৮ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় হবার পর ইউরোপা লিগে জয়ী হয়েছিল এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। কিন্তু এবারের পরাজয়ে সান্তনার ঐ সুযোগটি থাকলো না। ম্যাচ শেষে এ্যাথলেটিকো তারকা স্ট্রাইকার আঁতেয়া গ্রীজম্যান বলেছেন, ‘আমাদের শেষ ১৬ এমনকি ইউরোপা লিগে জায়গা পাওয়াও প্রাপ্য ছিলনা। গ্রুপে একটি মাত্র জয় কোনভাবেই কাম্য নয়। এখন আমাদের মুখ বন্ধ রেখে শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে। মৌসুমে এখনো অনেক ম্যাচ বাকি। নিজেদের ওপর যদি বিশ্বাস থাকে তবে আমরাও যে কঠিন দল এটা সবাইকে প্রমান করতে হবে। কোচ সিমিওনের সাথে কাজ করতে পেরে আমরা সবাই গর্বিত। এখন এটা মাঠে প্রমান করতে হবে।’ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথমবারের মত গ্রুপের শেষ দল হিসেবে আসর শেষ করলো এ্যাথলেটিকো। ২০১১ সালের ডিসেম্বও থেকে কোচ হিসেবে দলের সাথে থাকা দিয়েগো সিমিওনের ভবিষ্যত নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে। সিমিওনে বলেছেন, ‘তারা আজ ভাল খেলেছে, সবদিক থেকেই আমাদের তুলনায় এগিয়ে ছিল। গ্রুপের শেষ স্থানটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমাদের এখান থেকে অবশ্যই শিক্ষা নিতে হবে। ইউরোপ পিছনে চলে গেছে, লা লিগা সামনে আছে। লিগে নিজেদের মেলে ধরার বিকল্প নেই।’ আর্জেন্টাইন কোচ সিমিওনে গতকাল হুয়াও ফেলিক্সকে নিয়মিত একাদশে সুযোগ দিয়েছিলেন। শনিবার কাডিজের বিপক্ষে ৩-২ গোলের পরাজয়ের ম্যাচটিতে দারুন পারফর্ম করার পুরস্কার হিসেবেই পর্তুগীজ এই ফরোয়ার্ড মূল দলে জায়গা পেয়েছেন। যদিও দলের অন্যান্যের মতই এস্তাদিও ডো ড্রাগাওতে গতকাল ফেলিক্সও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। শুধুমাত্র গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক বেশ কয়েক বার পোর্তোর আক্রমণ রুখে দিয়ে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের লজ্জা থেকে এ্যাথলেটিকোকে রক্ষা করেছেন। পাঁচ মিনিটে ইভানিলসনের পাস থেকে পোস্টের খুব কাছে থেকে বল জালে জড়ান মেহদি টারেমি। গ্রুপ পর্বে এটি তার পঞ্চম গোল। এ্যাথলেটিকোর আগোছালো হয়ে ওঠার সুযোগ পোর্তো ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। টারেমির দারুন এক রিভার্স পাস থেকে গালেনোর শট ওবলাক দারুন দক্ষতায় পা দিয়ে রুখে দেন। কিন্তু ২৪ মিনিটে কোন ভুল করেননি স্টিফেন ইউস্টকিউ। গালেনোর এ্যাসিস্টে কানাডিয়ান এই মিডফিল্ডার ব্যবধান দ্বিগুন করেন। টারেমির আরো একটি দুর্দান্ত পাসে ইভানিলসনের শট ক্রসবারে লেগে ফেরত না আসলে প্রথমার্ধেই ব্যবধান আরো বাড়তে পারতো। গ্রীজম্যান বিরতির পরপরই এক গোল করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচের সময় যত গড়িয়েছে এ্যাথলেটিকোর হতাশা ততই বেড়েছে। এ্যাঞ্জেল কোরেয়ার শট পোর্তো গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা কোনমতে আটকে দেন। ইয়ানিত কারাসকোর শটও জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। ইভানিলনসের আরো একটি প্রচেষ্টা সরাসরি ওবলাকের হাতে ধরা পড়ে। স্টপেজ টাইমে কর্ণার থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ইভান মারকানোর হেডে আত্মঘাতি গোলের লজ্জায় পড়ে পোর্তো। গত মৌসুমে শেষ ১৬ নিশ্চিত করতে একই পরিস্থিতিতে পড়েছিল এ্যাথলেটিকো। কিন্তু দুই গোল দিয়ে ম্যাচে ফিরে আসার মত অবস্থা গতকাল আর সৃষ্টি করতে পারেনি সিমিওনের শিষ্যরা।