বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই বাসিন্দা কে উচ্ছেদ করে চেয়ারম্যানের পছন্দের লোককে বাড়ি দেওয়া, টাকা নিয়ে আট জনকে খাদ্য বান্ধব তথা ফেয়ার প্রাইজ কর্মসুচির কার্ড না দেওয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউনিয়নের ১২ নারী-পুরুষ আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ওই সংক্রান্ত লিখিত দিয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, দুই বছর পুর্বে ওই ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের ভুমি ও গৃহহীন মোছাম্মাদ রোজিনা বেগম ও মানিক হোসেনকে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর উপহার হিসাবে বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। তারা চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের জন্য বাড়িতে তালা দিয়ে রাখে। এমতাবস্থায় চলতি বছরের ১০সেপ্টেম্বর ইউপি চেয়ারম্যান ওই দুই বাড়ির তালা ভেঙ্গে ঘরের আসবাব ছুড়ে ফেলে দিয়ে উচ্ছেদ করে। এরপর চেয়ারম্যান তাঁর পছন্দের দুই জনকে ওই বাড়িতে উঠিয়ে দেয়। ফলে রোজিনা ও মানিক বাসস্থান হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। প্রায় দুই মাস পুর্বে ছুড়ে ফেলে দেওয়া কষ্টার্জিত আসবাবগুলো বৃষ্টি-রোদে পচে যাচ্ছে। এদিকে ইউনিয়নের দমদমা, সান্দিড়া ও প্রাণনাথপুর গ্রামের আট হতদরীদ্র তাদের অভিযোগে দাবী করেছেন তাদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি সান্দিড়া গ্রামের দালাল উজ্জলসহ অন্যান্য দালালের মাধ্যমে খাদ্য বান্ধব বা ফেয়ার প্রাইজ এর কার্ড করে দেওয়ার নামে দুই শ’ থেকে দুই হাজার টাকা করে গ্রহন করে। কিন্তু অদ্যাবধি তাদের কার্ড দেওয়া হয়নি। টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। বরং কার্ড বা টাকা ফেরত দাবী করলে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ ছাড়া সান্দিড়া গ্রামের এক ব্যক্তি চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির দালালদের মাধ্যমে গ্রামের দরীদ্র মানুষদের ভিজিডি এবং ফেয়ার প্রাইজ কার্ড করে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন।অভিযোগকারীরা অভিযোগের বিষয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, এ কারণে কোন বক্তব্য দিতে পারছি না। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার অভিযোগ পাওয়া বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ তদন্তে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা এবং মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অভিযোগকারীদের নিরাপত্তার কারণে নাম ব্যবহার করা হল না।