হরতাল কিংবা অবরোধ কর্মসূচি ছাড়াই সারাদেশের সাথে বিভাগীয় শহর বরিশালের সড়ক ও নৌপথের সবধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। একযোগে সকল পরিবহনের এই কর্মবিরতিতে চরম দুর্ভোগে পরেছেন বরিশালসহ আশেপাশের জেলা ও উপজেলার সাধারণ মানুষ।
যৌক্তিক কোন দাবী ছাড়াই শুক্র এবং শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকায় নৌপথে যাত্রীবাহি কোন লঞ্চ ছাড়বে না। বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরিন সকল নৌরুটের লঞ্চ। অপরদিকে মহাসড়কে অবৈধ নছিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ১৪টি অভ্যন্তরিন রুটে এবং রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে ২১টি অভ্যন্তরিন রুটে শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীবাহি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন রুটে রুট পারমিট বিহীন অবৈধ অটো রিকসার চলাচল বন্ধ, হয়রানি না করে চালককে দ্রুত সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, চাঁদাবাজি বন্ধসহ পাঁচদফা দাবিতে শুক্র এবং শনিবার সকল রুটে থ্রি হুইলার আলফা মাহেন্দ্রা বন্ধ রেখেছে সমিতির নেতৃবৃন্দরা। এতে করে চরম দুভোর্গে পরেছেন বরিশালের সাধারণ মানুষ। সবার একটাই দাবী কোন সঠিক কারণ ছাড়া হরতাল কিংবা অবরোধ ঘোষনা না করে সকল গণপরিবহন একযোগে বন্ধ করা একটি নির্যাতন।
তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা দাবি করেন, শনিবার বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করেই একযোগে সকল পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এমনকি নগরীর প্রবেশে সবগুলো খেয়াঘাটও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বাহিরে বের হওয়া মানুষ পরছেন চরম বিড়ম্বনায়।
শুক্রবার বিকেলে নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ স্টান্ডে বসে ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়। জরুরি কাজে আমি ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি। কিন্তু যানবাহন না পেয়ে ঢাকা থেকে বাসযোগে মাদরীপুরের কালকিনি পর্যন্ত আসি। এরপর অটোরিকশায় বরিশালের ভুরঘাটা থেকে গৌরনদী এবং পরে ব্যাটারীচালিত ভ্যানে করে বরিশাল পর্যন্ত এসেছি। পথে দুর্ঘটনায় আমার দুই হাত আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। সালমা বেগম নামের অপর এক যাত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বন্ধে আমরা সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
মাঠেই দুটি জামাতে জুমার নামাজ
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীরা মাঠেই পৃথক দুটি প্যান্ডেলে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। সমাবেশস্থলের সামিয়ানা নিচে প্লাস্টিকের চট ও জায়নামাজ বিছিয়ে যথানিয়মে বয়ান ও খুতবা পাঠ করেন ইমাম। সমাবেশ উদ্যানে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে বরিশালের বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হাসান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুজিবর রহমান নান্টুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ কর্মী সমর্থকরা অংশগ্রহণ করেন। বিএনপির দুই নেতা জুমার নামাজে ইমামতি করেছেন। কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা জালালুর রহমান আকন বলেন, একসাথে জুমার নামাজে হাজারো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে।