আখাউড়া-সিলেট রেলওয়ে সেকশনের হবিগঞ্জের মাধবপুরের মনতলা রেলওয়ে স্টেশনে আজও উন্নয়নের ছুয়া লাগেনি। লোকবল সংকট, স্টেশনের ছাউনি দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়া। সিগন্যাল ঘরটি জরাজীর্ণ অবস্থা, স্টাফ কোয়ার্টার দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়াসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। সরকারের অনেক মন্ত্রী,এম,পি উন্নয়নের আশ^াস দিলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। স্টেশন সূত্রে জানা যায়-সহকারি ষ্টেশন মাষ্টার পদ তিন জনের স্থলে আছেন মাত্র ১ জন। পয়েন্টসম্যান ৪ জনের স্থলে আছেন তিন জন। পোটার ২ জন থাকার কথা নেই এক জনও। গেইটম্যান তিন জনের স্থলে আছেন ২ জন।
১৮৯৬ সালে ব্রিটিশ আমলে মনতলা রেলওয়ে স্টেশনটি নিমার্ণ করা হয়। ওই স্টেশনের উপর দিয়ে ঢাকা-সিলেট, চট্রগ্রাম-সিলেট এ ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেন আসা-যাওয়া করে। কিন্তু একমাত্র আন্তঃনগর জয়েন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২ মিটিটের জন্য যাত্রা বিরতী করে থাকে। ঢাকা অভিমুখে ১০টি এবং সিলেট অভিমুখে ২০টি আসন বরাদ্ধ থাকলেও যাতাযাত করে এর দ্বিগুন যাত্রী।
বহরা ইউ/পি চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন জানান-এ স্টেশনের পাশেই মনতলা সরকারি শাহজালাল কলেজ, গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় ১৫টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকবিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে। প্রতিদিনই শত শত শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ওই স্টেশন দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয়। তাছাড়া ওই এলাকার শত শত শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকা ও সিলেট এর কলেজ ও বিশ^ বিদ্যালয়ে লেখা-পড়া করে। এ ছাড়া রেলস্টেশনের পার্শবর্তী চৌমুহনী ইউনিয়নে একটি বেসরকারি কোম্পানীর ফেক্টরী থাকায় এর কর্মকর্তা কর্মচারী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের। তারাও মনতলা স্টেশনের মাধ্যমে ট্রেনে যাতায়াত করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম গামী জালালাবাদ ট্রেনটি বিগত কয়েক বছর যাবত বন্ধ থাকায় মনতলা বাজারের বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম থেকে মালামাল আনতে পারেন না। তাই ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে জালালবাদ ট্রেনটি পুনরায় চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
স্টেশন মাষ্টার আতাউর রহমান খাদেম জানান-মনতলা ষ্টেশনে দুইজন সহকারি ষ্টেশন মাষ্টারের পদ শুন্য থাকায় তিনি একাই ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একজনের পক্ষে ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করা কঠিন হওয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ষ্টেশনের সকল কার্যক্রম ভোর ৬টা পর্যন্ত মোট ১২ ঘন্টা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দিনের ১২ ঘন্টা তিনি একই দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকাগামী আন্তুঃনগর জয়েন্তিকা ট্রেনটি সাপ্তাহিক ছুটি (বৃহস্পতিবার) ব্যতিত প্রতিদিন বিকাল ৩.১০ মিনিটে ঢাকা অভিমুখে মনতলা ছেড়ে যায়। এজন্য মাত্র ১০টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। অথচ এখান থেকে প্রতিদিন বরাদ্দ আসনের তিন গুন যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করেন। এ ছাড়া ঢাকাগামী সুরমা লোকাল ট্রেনটি রাতের বেলা ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।