কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ মিয়াকে অব্যাহতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার সন্ধায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফয়েজ রোমান খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃদ্বয় জানায়, সংগঠনের নীতি আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকায় নিকলী উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ মিয়াকে স্বপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। সেই সাথে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় নিকলী ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে নিকলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির চিনতাই মামলার চার্জসিট প্রদান করেছে নিকলী থানার পুলিশ। নিকলী থানার এসআই ইকবাল হোসেন এই চার্জসিট দাখিল করেন। মামলা এজহার ও চার্জসিট সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে ১৫ তারিখে রাত প্রায় সাড়ে ১২ টার দিকে নিকলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়ার হুকুমে অভিযুক্ত মনির হোসেন, সাইফুল ইসলাম দয়াল, রুবেল মিয়া, মোঃ হারুন, মোঃ সোহেল মিয়া, সাদ্দাম হোসেন, নজরুল ও এসএম আকাশ গং দেশীয় অস্ত্রসজ্জিত নিয়ে উপজেলার ঘোড়াদিগা আশ্রয়ণ প্রকল্পে বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ড্রেজারে কাছে গিয়ে ড্রেজারে ঘুমিয়ে থাকা তুষার, রায়হান ও সজিবদের ঘুম থেকে তুলে হুমকি দিয়ে বলেন, তোদের মালিকের কাছে দাবিকৃত ২ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। তখন ড্রেজারে থাকা তুষার, রায়হান ও সজিবরা প্রতিবাদ করলে তাদের উপর হামলা করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, ৩টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও ড্রেজারে থাকা ১০০শত লিটার তেলের ড্রাম ১টি ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ৯টা এর মাধ্যমে নিকলী থানার পুলিশ খবর পেয়ে অভিযোক্ত আসামি মনির, দয়াল, রুবেল ও ফারুককে আটক করে। তাদের বহন কারী নৌকা নিকলী থানা পুলিশ জব্দ করে। এ সময় অন্যান্য অভিযোক্ত আসামি নজরুল, আকাশ ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ অপর একটি নৌকা নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে এজহার নামীয় আসামীদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দী ছায়ালিপি পর্যালোচনায় এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মামলা এজহার নামীয় আসামি উপজেলার পূর্বগ্রাম জঙ্গলহাটি গ্রামে জালাল উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন (২৮), আবদুল আজিজের ছেলে সাইফুল ইসলাম দয়াল (৩৫), সাদেক মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২৮), ইসমত আলীর ছেলে ফারুক (৩৫), মৃত আবদুল কাদিরের ছেলে সুহেল মিয়া (২৮), জালাল উদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৫), মৃত সুনাম উদ্দিনের ছেলে নজরুল (৪৫), নূরুল ইসলাম উরফে নূরু মেম্বারের ছেলে এসএম আকাশ (২৫)। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়া গংদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পেনাল কোড ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩৮৫/৩৮৫/৫০৬/১১৪ ধারার অপরাধ প্রাথমিক ভাবে সত্য প্রমাণ হয় বলে চার্জসিটে উল্লেখ করা হয়। এই মামলায় প্রমানিত অভিযুক্তদের সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছে মামলার বাদী রাসেল মিয়া।