মেহেরপুরের গাংনীর বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হকের বিরুদ্ধে সভাপতির জাল স্বাক্ষর করে তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অর্থ বানিজ্যে করেছে বলে অভিযোগ করছে এলাকাবাসি। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে গেল বুধবার দুপুরে (০৯ নভেম্বর) বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য,শিক্ষার্থী সহ স্থানীয়রা।
অভিযোগকারীদের দাবি শেফালী খাতুনকে ২০১১ সালের ২৫ জুন লাইব্রেরিয়ান হিসেবে নিয়োগ দিলেও পরে তাকে (ব্যাকডেট) ২০০৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এ ছাড়া শেখ আল মামুন,সাহানাজ পারভীনকেও ২০০৪ সালে পত্রিকায় পূর্বের তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে (ব্যাকডেট) টাকার বিনিময়ে তাদেরও সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া শেফালী খাতুনের পদ ফাঁকা করে ২০১৭ সালে প্রধান শিক্ষক তার স্ত্রী সালমা খাতুনকে লাইব্রেরিয়ান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সহকারী শিক্ষক শেখ আল মামুন,সাহানাজ পারভীনকে ২০০৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেখানো হলেও বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কর্মচারী শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী তাদের স্কুলে দেখেননি বলে দাবি করেন। হঠাৎ কিছুদিন আগে তারা স্কুলে শিক্ষকতা করছে এমন ঘটনায় বিক্ষোভে ফুসে উঠে স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বিদ্যালয়ে ২০০৩ সালে যোগদান করার পর থেকে নানা অনিয়ম দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।
২০০৪ সালে বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বে থাকা সিরাজুল ইসলাম বলেন, শেখ আল মামুন,সাহানাজ পারভীন ও শেফালী খাতুনকে তিনি নিয়োগ দেননি। প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জাল স্বাক্ষর করে তাদের নিয়োগ দিয়েছেন।
২০০৪ সালে বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দাতা ও সহ সভাপতি এমরান হোসেন বলেন, তিনি দায়িত্ব পালনকালে কোন শিক্ষক নিয়োগ দেননি। যাদের নিয়োগ দেওয়ার কথা বলছে প্রধান শিক্ষক তাদের তিনি কখনও দেখেন নি।
বিদ্যালয় পরিচালণা পর্ষদের সাবেক সদস্য সাহাবুদ্দীন বলেন,তিনি যখন বিদ্যালয় পরিচালণা পর্ষদের সদস্য ছিলেন তখন এই তিনজন শিক্ষককে বিদ্যালয়ে দেখেননি। প্রধান শিক্ষক জালজালিয়াতি করে নিয়োগ দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম,এনামুল হক,খলিলুর রহমান,আব্দুল মতিন ও ময়নাল হোসেন বলেন, ২০ বছর নানা অনিয়ম দূর্নীতি করছে। প্রধান শিক্ষক ব্যাকডেট দিয়ে ৩জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অর্ধকোটি টাকারও বেশি বানিজ্য করেছে। যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে ইতোপূর্বে তাদের চোখে দেখিনি। হঠাৎ তাদের বিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে। নিয়োগকান্ডে ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করছে। নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা এখন বেতন ভাতা তুলছেন বলেও জানান তারা।
সাবেক ছাত্র মিঠুন রানা ও সাবের হোসেন বলেন, যাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে তাদের ক্লাস নেয়নি এমনকি কোনদিনও বিদ্যালয়ে দেখেন নি তারা। প্রধান শিক্ষক দূর্নীতি গ্রস্থ। শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
কোথায় নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে এটা তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন ২০০৪ সালে নিয়োগ পাওয়া দাবিকারী সহকারী শিক্ষক এম এ মামুন ও শাহানাজ খাতুন।
বর্তমান সভাপতি রিকাত আলী বলেন, এসব ঘটনা আগের তাই এ বিষয়ে জানা নেই। বিটিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন,কৌশলগত কারণে শেফালী খাতুনকে শিক্ষক পদে থাকা সত্বেও শেফালী খাতুনকে লাইব্রেরিয়ান হিসেবে নিয়োগ দেখানো হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে জালস্বাক্ষর করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলা শিক্ষা অফিসার মো: মাহফুজুল হোসেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।