বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর ট্রেনটি এখন শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনে। শনিবার সকাল ৯:৪০ মিনিটে সিলেটগামী ৯ আপ সুরমা মেইল ট্রেনে করে বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর ট্রেনটি শ্রীমঙ্গল এসে পৌছে।
আাজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধোধনের পর জাদুঘর দেখতে সাধারন মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষনীয়।
শনিবার থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৬ দিন জাদুঘরটি শ্রীমঙ্গল স্টেশনে অবস্হান করবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জাদুঘরটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পরে ১৭ নভেম্বর রাতে কুলাউরা রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে রওনা হবে বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত কুলাউরা অবস্হান করে কুলাউরা থেকে রেল জাদুঘরটি সিলেট যাবে। সিলেটে ট্রেনটি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত থাকবে। বর্তমানে এই ট্রেন জাদুঘরটি শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশনের তিন নম্বর লাইনে রাখা হয়েছে।
রেলসূত্র আরও জানায়, গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়্যালি যুক্ত হয়ে এ জাদুঘর উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগস্টের প্রথম দিন থেকে দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছে রেলের এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর।
আজ সকালে এ জাদুঘরে গিয়ে দেখা যায়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিটি বেশ সুন্দর পরিপাটি। বগিতে উঠতেই কানে আসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। দরজার পাশে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত মুজিব শতবর্ষের লোগো। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবন-আন্দোলন সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে। জাদুঘরে স্থান পেয়েছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর টুঙ্গিপাড়ার বাবার বাড়ি, জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ছবি।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা, দলীয় প্রতীক নৌকা, মুজিব কোট, মুজিব শতবর্ষের লোগো এবং বঙ্গবন্ধুর লেখা বই, মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ প্রভৃতি বিষয় স্হান পেয়েছে।
এছাড়া জাদুঘরটিতে তৈরি করা হয়েছে একটি বুকশেলফ। সেখানে শোভা পাচ্চে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়াচীনসহ তার কর্মময় জীবনের ওপর রচিত অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বই।
রেলসুত্র জানায়, এ জাদুঘর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ নির্মাণ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাঁথা। তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানলে তাদের মধ্যে দেশকে নিয়ে আরও জানার আগ্রহ বাড়বে।
এদিকে শনিবার সকাল ১১ টায় শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশনে ভ্রাম্যমান জাদুঘরের শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্হায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ এমপি। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, এসি ল্যা- সন্ধীপ তালুকদার, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব প্রমুখ।
পরে প্রধান অতিথি উপাধ্যক্ষ মো. আবদুস শহীদ অতিথিবৃন্দকে নিয়ে জাদুঘরটি ঘুরে দেখেন।