১৫ নভেম্বর সিডর দিবসে বলেশ্বর নদের ভাঙ্গন প্রতিরোধে নদী শাসনের দাবীতে মানববন্ধন করেছে সিডরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মৃত্যুপুরী হিসেবে খ্যাত শরণখোলার সাউথখালীর মানুষ। নদী শাসন আন্দোলন কমিটির ব্যনারে সাউথখালীর গাবতলা বেড়িবাঁধের উপর দাঁড়িয়ে শতশত মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সাত বছরেও বেড়িবাধের কাজ শেষ করতে পারেনি। নদী শাসন না করে বেড়িবাধের কাজ করায় এরইমধ্যে কোথাও কোথাও ফাটল দেখা দিয়েছে।
এ মনববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রায়হান উদ্দিন শান্ত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম আকন, শিক্ষক শহিদুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা ইমরান হোসেন রাজিব, পলাশ মাহমুদ, আলামিন খান, হালিম শাহ, প্রমুখ। পরে সিডরে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলঙ্কারী ঘর্ণিঝড় সিডরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়ন। বলেশ্বর নদের পাশে ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাধ এলাকায় অবস্থানের কারণে শুধু সাউথখালীতে ৭ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। একই পরিবারে ৯ জনের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া শতভাগ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধের কারণে ওই ইউনিয়নটিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিল সবচেয়ে বেশি। একারনে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে সাউথখালী নামটি সারা বিশ্বে পরিচিতি পায়। এ সময় সিডর পরবর্তী শরণখোলাবাসীর দাবী ছিল “ত্রান চাই না মোরা টেকসই বেড়িবাঁধ চাই”। কিন্তু সিডরের ১৫ বছর পর সরকার তিনশত কোটি টাকা ব্যয়ে ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মিত হলেও নদী শাসন না করায় সে বাঁধও এখন কোথাও কোথাও ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সাউথখালীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকলেসুর রহমান, ইউপি সদস্য মোঃ জাকির হোসেন, রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, এলাকাবাসীর দাবীতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বেড়িবাঁধ নির্মান করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সাত বছরেও কাজ শেষ করতে পারেনি। এ ছাড়া বগী, গাবতলা, রায়েন্দা গ্রাম, আমতলী পয়েন্টে নদী শাসন না করলে নির্মিত বেড়িবাঁধ আবার ভেঙ্গে যাবে। ইতোমধ্যে ওইসব স্থানের বাঁধে বড় বড় ফাঁটল দেখা দেয়ায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাই নদী শাসন না হলে কোনভাবেই এই বেড়িবাঁধ টিকবে না। এ ছাড়া পাউবোর বিশেজ্ঞ দল পরিদর্শন করে নদী শাসনের আশ্বাস দিলেও এর কোন বাস্তবায়ন না দেখে তারা আন্দোলনে নেমেছেন।