বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন- আকাশচুম্বী রিজার্ভ, বিদ্যুতের বন্যা বইয়ে দেওয়া ও জাতীয় আয় নিয়ে ভুয়া পরিসংখ্যান তৈরি করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছে সরকার। কিন্তু দেশের মানুষ কখনো সেগুলো বিশ্বাস করেনি। আর আওয়ামী লীগ সরকার কত ধাপ্পাবাজ তা এখন আন্তর্জাতিকভাবে উন্মোচিত। দেশের মানুষ জীবন দিয়ে তা উপলব্ধি করছেন। অধিকাংশ মানুষের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতা মুনির হোসেন, সেলিমুজ্জামান সেলিম, সাইয়েদুল আলম বাবুল, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আসন্ন সিলেট, কুমিল্লা, রাজশাহী ও ঢাকার সমাবেশকে ব্যর্থ করার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে ‘অপারেশন সার্চলাইটের’ মতো সহিংস আক্রমণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপির গণসমাবেশ সফল হওয়ায় সরকারের গা-জ্বালা করছে। কিন্তু সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সমাবেশ স্থলের দিকে জনগণের এগিয়ে আসাকে সরকার কোনোভাবেই মানতে পারছে না। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে মানুষকে এক ঘোর অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়ে এখন প্রধানমন্ত্রী নিজেকে টিকিয়ে রাখার কোনো উপায় না পেয়ে বিএনপিকে দমনে নির্বিচারে রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি সভার অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার নরসিংদীর বিএনপি কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে। কার্যালয়ের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনসহ নেতাদের অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখার পরে পুলিশ কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে অবরুদ্ধ নেতাদের হয়রানি ও নাজেহাল করে। তারপর তাদের চিরচেনা চক্রান্তের অংশ হিসেবে সাজানো কাহিনি তৈরি করে। লাইসেন্স করা বিএনপি নেতার অস্ত্রকে তারা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহেল, বিএনপি নেতা আবদুল বাতেন, জামাল মিয়া, মনিরুল ইসলাম মনির, জেলা কৃষকদল নেতা কামাল উদ্দিন কমল, ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। ১৯ নভেম্বর সিলেটে গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সহিংস সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। গুম হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়িতে হামলা করে তারা। তিনি গণসমাবেশে লিফলেট বিতরণকালে ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালায়। এতে গাড়ির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয় এবং লুনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। অথচ পুলিশ ওসমানী নগর উপজেলা ছাত্রদলের ফয়সাল আহমেদ, নুরুল ইসলাম ও শাহেদ আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। নরসিংদীতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ওপর পুলিশের হামলা ও দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান রিজভী।