পাবনার চাটমোহরে মায়ের দায়ের করা মামলায় এক সন্তান এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন। ঘটনাটি উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের।
জানা গেছে,ওই গ্রামের ইয়াকুব প্রামানিকের স্ত্রী মাজেদা খাতুন (৬২) দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলে শাহ আলমের সাথে বসবাস করছিলেন। মা-বাবার খাবার সহ আনুষঙ্গিক সকল দায়িত্ব পালন করতেন শাহ আলম। ডিম ও মুরগীর ব্যবসায়ী শাহ আলম ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হন। একপর্যায়ে তার মা মাজেদা খাতুন জমি বিক্রি করে শাহ আলমের ব্যাংক ঋণ পরিশোধে সহযোগিতা করেন। বিষয়টি জানার পর শাহ আলমের ভাই আঃ সামাদ ও বোন-ভগ্নিপতি শাহ আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে মাকে নানাভাবে আয়ত্বে আনেন। একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মা মাজেদা খাতুন ছেলে শাহ আলমের বাড়ি থেকে চলে যান এবং বিভিন্ন স্থানে বলেন তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মাজেদা খাতুন পাবনার রুপপুরে মেয়ে রেশমার বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে অন্য ছেলে ও মেয়েদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জমি বিক্রির টাকার বিষয়ে অভিযোগ তৈরি করে মাজেদা খাতুন ছেলে শাহ আলমের বিরুদ্ধে পাবনার আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। শাহ আলমের স্ত্রী আরিফা খাতুনকেও বিবাদী করা হয়।
মামলার আরজিতে জমি বিক্রির ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা টিনের বাক্স ভেঙে বের করে নেওয়া ও মাকে মারপিট শ^াসরোধ করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ করা হয় শাহ আলমের বিরুদ্ধে। এ মামলায় আদালত শাহ আলমকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠান। পরে জামিন পেয়ে মুক্ত হন।
এদিকে ছেলে শাহ আলমের বিরুদ্ধে মায়ের দায়ের করা মামলার বিষয়টি এলাকায় আলোচিত হচ্ছে। সরেজমিন ভবানীপুর গিয়ে জানা যায়,শাহ আলমের মামা তোয়াজ আলী,ভাই আঃ সামাদ ও বোন রেশমাসহ অন্যরা মাজেদা খাতুনকে ভুল বুঝিয়ে মামলাটি করিয়েছেন। মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই। শাহ আলম তার মাকে কোনদিন মারপিট করেননি এবং বাড়ি থেকে বের করেও দেননি।
মামলায় অভিযুক্ত শাহ আলম বলেন,আমার ভাই বোন ও ভগ্নিপতি মাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। মায়ের সাথে আমাকে কথা বলতে বা দেখা করতে দেওয়া হচ্ছেনা। উপরন্তু আমাকে নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শাহ আলম জানান,তার ভাই ও বোন মায়ের নামে আমার খামার বাড়ি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার জন্য বলছে। তাহলে মামলা প্রত্যাহার করা হবে। জেল খাটানোর পর আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চলছে। আমি পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি বলেন,মায়ের মামলার পর কোন রকম তদন্ত করা হয়নি। যাটাই করা হয়নি সত্য-মিথ্যে। শাহ আলম মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রতিকার চান।
এ বিষয়ে মাজেদা খাতুন ও শাহ আলমের ভাই আঃ সামাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।