শহীদদের শয়তান এবং তাঁদের রাস্তার মাটিতে ফেলে পিঁপড়ার মতো পা দিয়ে কচলায় মারবো এমন কটুক্তি যোগাযোগ মাধ্যমে খান দিলনেওয়াজ নামের আইডি থেকে পোষ্ট দেখে ক্ষোভে ফুঁসেছে সৈয়দপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এরই প্রতিবাদে ২২ নবেম্বর শহরের আদিবা কনভেনশন হলে শহীদ পরিবারের সন্তান ও সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হকের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তান মীর্জা সালাহউদ্দিন বেগ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খান দিলনেওয়াজ নামে আইডির ব্যক্তি একজন স্বীকৃত ও কুখ্যাত রাজাকার পুত্র। তার পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পার্বতীপুর ও সৈয়দপুর শহরে ট্রেন ট্রাজেডী নামের নারকীয় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন সৈয়দপুরে পাকিস্তানি দোসরদের অন্যতম। তাই স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও এ দেশের শ্রেষ্ট সন্তানদের ওপর অনেক ক্ষোভ তাদের । যার বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে ফেসবুকে। আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি, ট্রেনিং নয়। প্রয়োজনে আর একবার দেশকে শত্রুমুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ব। তবু শহীদদের এই অবমাননা সহ্য করা হবে না।
শহীদ পরিবারের সদস্য ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, দিলনেওয়াজ কুখ্যাত রাজাকারের সন্তান। তার বাবা অনেক নারকীয় ঘটনার নায়ক । সে ক্ষমা চেয়ে তার পিতার কর্মকান্ডের কথা স্বীকার করলে আমরা মাফ করে দিতাম। তবে সে তার বাহিনী দিয়ে নানা অপকর্ম ঘটাচ্ছে। সে দীর্ঘদিন থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের বাগিয়ে পৌর যুবলীগের আহবায়কের পদে আছে। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বাধীন এই দেশের শহীদ পরিবারের সদস্যরা কখনই মেনে নিতে পারে না।
শহীদ পরিবারের সন্তান, প্রজন্ম-৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক বলেন, বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলদেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মধ্যম আয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে। দৃশ্যমান উন্নয়নে প্রতিটি উপজেলায় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তবে পাকিস্তানী প্রেতাত্মারা উন্নয়ন ঠেকাতে নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এরা দলের পতাকাতলে আশ্রয় নিয়ে শহীদদের অবমাননা করছে দিলনেওয়াজ । মহান মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে দেশ পেয়েছি। তবে জীবন থেকে মা-বাবা, ভাই-বোনসহ সবকিছু হারিয়েছি। সেই ব্যাথার ক্ষত আজও কষ্ট দিচ্ছে। রাজাকার পুত্র দেশের জন্য আত্মসাতকারীদের কচলিয়ে মারবে।
তিনি আরও বলেন, রাজাকার পুত্রের ধৃষ্টতার প্রতিবাদে আমরা শান্তিপুর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এ ব্যপারে সৈয়দপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে দিলনেওয়াজ খানকে আইনের আওতায় না নেয়া হলে কঠোর আন্দোলনে এ শহরকে অচল করে দেয়া হবে।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: ফজলুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ: মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোনায়মুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, শহীদ পরিবারের সন্তান মিজানুল হক, সাবেক কাউন্সিলর সরকার কবির উদ্দিন ইউনুস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টু,পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি সারফরাজ মুন্না, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ দপ্তর সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দগণ উপস্থিত ছিলেন।