নীলফামারীর সৈয়দপুরে অনেকটা হরিলুট অবস্থা রেলওয়ের সরকারী জায়গা। এ শহরে দিনে নয় রাতে করা হয় ভবন নির্মাণ কাজ। রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে পরবর্তীতে বহুতল ভবন নির্নাণ করা হয় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে। কোটি কোটি টাকার জায়গা দখল করে করা হচ্ছে বড় বড় অট্টালিকা। আর ভুমিহীনরা একটু ঝুপড়ী তুললে তাদের প্রতি যত অত্যাচার করা হয়।
সৈয়দপুর শহরে শতকরা একশ ভাগের মধ্যে ৯০ ভাগ জায়গা রেলওয়ের। এ জায়গাগুলো বেশীর ভাগ দেশ স্বাধীনের পুর্ব থেকে কতিপয় ভুমিদস্যুদের দখলে। আর ওই সকল ভুমিদস্যুদের সাথে সখ্যতা রেলওয়ে ভুসম্পত্তি বিভাগের কতিপয় ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের। যার কারণে বার বার উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা ব্যর্থ হয়ে যায়।
বর্তমান সরকার রেলওয়েকে পুরো আলাদা করেছেন। বেহাত হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে সরকার অভিযান পরিচালনা করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সৈয়দপুরেও চলে উচ্ছেদ অভিযান। সিলগালা,জরিমানা,জেল ও অর্থদন্ড দেয়া হয় বেশ কয়েকজনকে। আবার পৌর মেয়রের তোপের মুখে পড়ে পিছু হটে অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্টেট। সৈয়দপুরের বেশির ভাগ ব্যবসায়ির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের জায়গায়। ফলে ওই সকল ব্যবসায়ি সব সময় থাকে উচ্ছেদ আতংকে।
এদিকে কতিপয় ব্যক্তি রেলওয়ে পাকশী থেকে ৯৯ বছরের লিজ নিয়ে দখলে রেখেছেন জমি। কেউ কেউ লিজ নেয়ার পর থেকে অর্থাৎ যুগ যুগ ধরে ওই সরকারী জায়গা দখল করে বসবাস বা কৃষিকাজে ব্যবহার করলেও লিজের শর্তানুযায়ী টাকা পরিশোধ ভুলে গেছেন। তাদের লিজ অটোমেটিক বাতিল হলেও দায়িত্বে থাকা কর্তারা চুপচাপ। অভিযোগ অনেকের অভিযান বা উচ্ছেদের নামে অত্যন্ত গোপনে চলে লেনদেন। ফলে সরকার সৈয়দপুরে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার করতে পারছে না।
মজার ব্যাপার হল মানুষ সাধারণত ভবনের কাজ করে দিনে আর রাতে থাকে কাজ বন্ধ। কিন্তু সৈয়দপুরে ব্যতিক্রম। এ শহরে রেলওয়ের জায়গায় দিনে কাজ করলে সমস্যা হতে পারে তাই কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সারারাত ধরে সরকারী জায়গায় বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করা হয়।
সৈয়দপুর শহরের শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়ক, শহীদ সামসুল হক সড়ক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পাশে, তারিক লাইব্রেরির পিছনে,আরাফাত বোডিংয়ের পাশে বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। রাতের বেলা করা হচ্ছে কাজ। রেলওয়ের প্রায় একশো কোটি টাকা মুল্যের সম্পত্তিতে বেশ কয়েকজন ভুমিদস্যু কোন প্রকার লিজ না নিয়েই সরকারী জায়গা দখলে নিয়ে করছে স্থায়ী ভবন নির্মাণ। এ ভবনগুলোর কোন নকশা নেই। নেই রেলওয়ের কোন লিখিত কাগজ।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে ভুসম্পত্তি বিভাগের কানোঙ্গো জিয়াউর রহমান বলেন,অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারা সরকারী সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণ করছেন তারা ভুল করছেন। যে কোন সময় তাদের স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হবে।