মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সারাদেশে নতুন করে ২৬ হাজার পরিবার পাচ্ছে জমিসহ নতুন ঘর। সারাদেশের ন্যায় খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায়ও নতুন করে জমিসহ ঘর পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ২০২ টি পরিবার। এই ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক লাল-সবুজের পতাকার রং লাল-সবুজ রঙ্গিন টিনের ছাউনির ঘর স্বপ্ন পূরণে নিজের হাতে বুঝে পাবেন সহায় সম্বলহীন এসব মানুষ। দিঘলিয়ার আতাই নগর আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ষাটোর্ধ জয়গুন বেগম ও তানজিল হাওলাদারের ছোট্ট একটা সংসার। বারান্দায় বসে তরকারি কাটছেন জয়গুন বেগম কারণ বাড়িতে আত্মীয় বেড়াতে আসবে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন একসময় ছোট্ট একটা কুড়েঘরে রাতের পর রাত কাটিয়েছি, সেসময় কোন আত্মীয়স্বজন বেড়াতে আসলে অস্বস্তিতে থাকতাম আর এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণেআশ্রয়ণ প্রকল্পে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘরসহ দুই শতাংশ জমি আছে আমাদের। প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটা ঠিকানা দিয়েছেন। আমরা এখানে পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে ইচ্ছামত সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারছি। নতুন করে দিঘলিয়ার ব্রহ্মগাতী মৌজার কদমতলা এলাকায় নতুন ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে। এ সকল উন্নয়ন কাজের কাঁচা মালামাল ক্রয় ও কাজের গুণগত মান দেখভাল করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সকল সদস্য পর্যায়ক্রমে কাজের দেখাশুনা করছেন। সরকারি একজন ট্যাগ অফিসারকে নির্মান কাজ তদারকি করতে দেখা গেছে। দুই শতাংশ জমির উপর দুই কক্ষ বিশিষ্ট ভবনের লম্বা বারান্দা এবং প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে ব্যায় ধরা হয়েছে দুই লক্ষ ঊনষাট হাজার টাকা। দিঘলিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আরিফ হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন ইটের দেয়াল, কনক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি এসব সেমি পাকা ঘরে শয়নকক্ষ, একটি খোলা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও কটি শৌচাগার রয়েছে। দিঘলিয়া উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালে ৭০ জন গৃহহীন পরিবারকে জমি সহ ঘর প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০ জন, তৃতীয় পর্যায়ে ৩৫ জন ও বর্তমানে ২০২ পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ মাহমুদুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন ২০২টি গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনিয়ম যাতে না হয় সেজন্য সরকারি কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সিসিটিভি স্থাপন করে নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুজিববর্ষে দেওয়া উপহার হিসেবে প্রদত্ত একসঙ্গে এত মানুষকে বিনামূল্যে বাড়ি-ঘর দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল ভূমিহীন পরিবার ঘর পাবে। দিঘলিয়ার কোনো মানুষই গৃহহীন থাকবেনা।