অধ্যক্ষর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগ পন্থি ১০ শিক্ষার্থীকে স্ট্যান্ডরিলিজ (তাৎক্ষণিক বরখাস্ত) করা হয়েছে। তাদের দেশের বিভিন্নস্থানের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বদলি করা হয়েছে। ঘটনাটি জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ভাগ্নে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কারসাজি করে তাদের স্ট্যান্ডরিলিজ করিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা যে কারণে আন্দোলন করেছে, সেই অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে শিক্ষার্থীদের স্ট্যান্ডরিলিজের আদেশের চিঠি শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতে পেয়েছে। চিঠিতে ১০ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে স্ট্যান্ডরিলিজকৃত প্রতিষ্ঠানগুলো লেখা রয়েছে। আজ ২৬ নভেম্বরের মধ্যে বদলির প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বদলি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিয়াম সরদারকে রংপুর, আরিফুল ইসলামকে গাইবান্ধা, মোঃ ইব্রাহিম ও নামজুল হাসানকে ঝিনাইদহে, জাহিদ হাসান অন্তিমকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জাবেদুর রহমান মাহিকে সিলেট, তাসনিম জাহান শেহতাজকে কুমিল্লা, মারিয়া তুন ইভাকে শেরপুর, মোজাম্মেল হককে গাজীপুর ও সজীব মিস্ত্রিকে রাঙ্গামাটিতে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী সিয়াম সরদার বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাকে অপসারণের দাবীতে অতিসম্প্রতি আমরা বিক্ষোভ করেছিলাম। ওইসময় খামারবাড়ির কর্মকর্তারা ও ইউএনও আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করি। এরপর অধ্যক্ষর অনিয়ম তদন্তে গত ৮ নভেম্বর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠণ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার। এরইমধ্যে আমরা যারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি তাদের সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে বদলি করা হয়েছে। সিয়াম আরও বলেন, যার অনিয়ম তদন্তে কমিটি করা হয়েছে, সেই দুর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ভাগ্নে এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমাদের ওপর দীর্ঘদিন থেকে ক্ষিপ্ত ছিলো।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের স্ট্যান্ড রিলিজ দিয়েছে। এখানে আমার কোন হাত নেই। তদন্ত কমিটির প্রধান ঢাকা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মকবুল আহম্মেদ বলেন, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বদলি করা হয়েছে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার, তদন্ত কমিটি গঠণকারী মোসাম্মৎ মরিয়ম বলেন, শুধু যে শিক্ষার্থীদের বদলি করা হয়েছে বিষয়টি তেমন নয়; এরসাথে দুইজন উপ-সহকারী পরিচালককেও বদলি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও সিদ্ধান্ত আসতে পারে।