চিত্ত বিনোদন হীন শিক্ষার কোন মূল্য নেই। দেহের খোরাক যেমন খাবার, মনের খোরাক তেমন চিত্ত বিনোদন। তাই শিশুদের মনকে ভালো রাখার জন্য এবং শিশুদের মেধা বিকাশের জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে হয়।
বর্তমান সময়ে পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুদের মেধা বিকাশের জন্য সরকার বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় কালিয়াকৈরের সফিপুরে শাহীন স্কুল এর উদ্যোগে আজ (২৬ নভেম্বর) শনিবার সকাল ৯ টায় চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শাহীন স্কুল গাজীপুর শাখার পরিচালক মুহাম্মদ মফিজ উদ্দিন মাফি। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শাহীন স্কুল সফিপুর শাখার পরিচালক জানাব মোঃ ইকবাল হোসাইন শিক্ষার্থীদের মাঝে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আওলাদ হোসেন।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্লে থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৪৫০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিটি শ্রেণিতে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট এবং বাকি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ প্রদানের জন্য সান্তনা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
দেশের সকল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ন তথ্য প্রদান করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ মফিজ উদ্দিন মাফি বলেন, শিক্ষার্থীদের শুপ্ত মেধা বিকাশে চিত্র অঙ্কন সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই এবং তিনি আরও বলেন শিশুকে স্বাভাবিক ভাবে বাড়তে দিতে হবে। খেলাধুলা ও সৃজনশীল কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। এতে শিশু স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে তার সামাজিক বিকাশ ঘটবে। তবে বন্ধু নির্বাচনে পিতা-মাতাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে ইত্যাদি। শিশুরা বাবা-মা'র কাছেই লেখাপড়া, নৈতিকতা, আদর্শ বা দেশপ্রেম সম্পর্কে জানতে শুরু করে। তাই মা-বাবাই হচ্ছেন শিশুর প্রথম আদর্শ শিক্ষক। কিংবা মা-বাবাকেই শিশুরা তাদের প্রথম আদর্শ গুরু হিসেবে মানতে শুরু করে। আর সে কারণে শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজন।সন্তান প্রতিপালন আজকাল মা-বাবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সন্তানকে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ আজকাল ছেলেমেয়েরা একটু বেশি স্বাধীনতা চায়, আর তারা একটু বেশি সংবেদনশীল।
তাই খুব সহজেই ঘটে যায় নানা বিপত্তি। এ কথা বলা হয়ে থাকে যে, একটি শিশুর প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র হচ্ছে তার পরিবার। বড় হয়ে সে যে পরিবেশেই শিক্ষা নিতে যাক কেন পারিবারিক শিক্ষার একটা প্রভাব তার মধ্যে সবসময় পরিলক্ষিত হয়।
আপনিই হতে পারেন আপনার সন্তানের সবচেয়ে প্রিয় আর বিশ্বস্ত বন্ধু। অবসর সময়ে তার সঙ্গে আড্ডা দিন। খোঁজখবর নিন তার লেখাপড়া আর সহপাঠীদের সম্পর্কে। মাঝে মাঝে তাকে নিয়ে ঘুরতে যান। তাহলে সে আপনার সঙ্গে সহজ হতে পারবে আর সব কিছু শেয়ার করতে পারবে।
বড়দের শ্রদ্ধা আর ছোটদের স্নেহ করতে শেখান: আপনার সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই বড়দের সম্মান আর ছোটদের আদর করতে শেখান।আর এ শিক্ষাটা তার পরিবার থেকেই শুরু করুন। পরিবারের বড়দের কথা মেনে চলা, ছোট ভাই বোনদের সঙ্গে জিনিসপত্র শেয়ার করা।
শৃঙ্খলা মেনে চলতে শেখান: সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই উৎসাহ দিন নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে। অনেকেই এটাকে পরাধীনতা মনে করে। আসলে নিয়ম মেনে চলা পরাধীনতা নয়।শৃঙ্খলা মানে হচ্ছে জীবনকে গুছিয়ে চলা, যা জীবনকে আরও সুন্দর ও পরিপাটি করে তুলে।
সন্তানকে নীতিগত শিক্ষা দিন: ছোটবেলা থেকেই সন্তানকে নীতিগত শিক্ষা দিন। কখনোই সন্তানকে অন্যায় করতে উৎসাহ দেওয়া উচিত নয়। কারণ অন্যায়ের পরিণতি সব সময় খারাপ হয়।
সন্তানকে যথাযথ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন: অনেক বাবা-মা আছেন যারা অতিরিক্ত আবেগে ভুলে যান যে, তার সন্তান শুধু পারিবারিক গ-িতেই জীবন পার করবে না। তাকে বড় হয়ে অনেক কিছু সামাল দিতে হবে। তাই আপনার সন্তানকে স্বাবলম্বী ও যথাযথ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন পরিশেষে সেরা শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের মাঝে প্রধান অতিথি সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।